জুলাই ১৮, ২০২১ ১২:৫৮ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১৮ জুলাই রোববারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • করোনার টিকা নিয়ে স্বস্তি, দুই কোটি ডোজ আসছে-প্রথম আলো
  • মফস্বলের রোগীতে ঠাসা রাজধানীর হাসপাতাল-ইত্তেফাক
  • ঢাকায় ১৮৪৯ শিশুর চিকিৎসা, ১৪২ জনের মৃত্যু -মানবজমিন
  • ফেসবুকে ভুয়া তথ্য মানুষকে হত্যা করছে -কালের কণ্ঠ
  • মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, তীব্র যানজটে নাকাল মানুষ -যুগান্তর
  • -বাংলাদেশ প্রতিদিন

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক কি বাংলাদেশের নাগরিক? প্রশ্ন তৃণমূলের, হিন্দু তো বটে’ বলল বিজেপি-আনন্দবাজার
  • মোদির রাজ্যেও দিদির ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি, একুশে জুলাইয়ের বক্তৃতা বড় পর্দায় দেখাবে গুজরাট -সংবাদ প্রতিদিন
  • মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্য, বাড়ছে আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা -আজকাল

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

করোনা, টিকা, লকডাউন সম্পর্কে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে নানা খবর পরিবেশিত হয়েছে। প্রথম আলোর শিরোনাম-টিকা নিয়ে স্বস্তি, দুই কোটি ডোজ আসছে। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন উৎস থেকে বাংলাদেশ প্রায় ২ কোটি ডোজ টিকা পাবে। এদিকে চীনের তৈরি সিনোফার্মের আরও ১০ লাখ ডোজ করোনার টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে। আর সংক্রমণ পরিস্থিতি- এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ১৬ শতাংশ। ১ হাজার ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে গত সপ্তাহে। এর আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৭৭ জনের। ইত্তেফাকের খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি সব হাপসাতাল রোগীতে ঠাসা। আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা খালি নেই। রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি ৭০ ভাগ রোগী মফস্বলের। এদিকে,দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আরও ৮১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বলে দৈনিকটি খবর দিয়েছে।

২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন

‘২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন, বন্ধ থাকবে সব শিল্পকারখানা’-সরকারি কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ-ইত্তেফাকের এ খবরে লেখা হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর আগামী ২৩ জুলাই শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউনে গার্মেন্টসসহ সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।তিনি বলেছেন, ঈদের পর ১৪ দিন যে লকডাউন আসছে তা কঠোর থেকে কঠোরতম হবে।জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবারও কঠোর লকডাউন শুরু হবে।তবে কালের কণ্ঠের একটি খবরে বলা হয়েছে,পোশাক কারখানা খোলা-বন্ধ নিয়ে কাটছে না সংশয়-উদ্যোক্তাদের আশা, ইতিবাচক বার্তা আসবে।

ঢাকায় ১৮৪৯ শিশুর চিকিৎসা, ১৪২ জনের মৃত্যু-মানবজমিন

শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ

শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। রাজধানীর হাসপাতালগুলোর তথ্য বলছে, আগের তুলনায় এখন শিশু রোগী আসছে বেশি। হাসপাতালে আসাদের অনেকের সাধারণ উপসর্গ থাকায় পরীক্ষার পর করোনা ধরা পড়ে। যেসব শিশুর গুরুতর অন্য রোগ রয়েছে তাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনছে এই করোনা। ঢাকা মেডিকেল ও ঢাকা শিশু হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় আলাদা ওয়ার্ড রয়েছে। এই দুই হাসপাতালে শুক্রবার পর্যন্ত ১৮৪৯ জন শিশু করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মারা যাওয়া শিশুদের শুধু করোনা ছিল না।তাদের প্রায় সবার অন্য এক বা একাধিক জটিল রোগ ছিল। জটিল রোগের সঙ্গে করোনা সংক্রমণ হওয়ায় ওই শিশুদের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। কারণ অন্য রোগের কারণে শিশুদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এমন অবস্থায় করোনার সংক্রমণ তাদের কাবু করে ফেলে।

মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, তীব্র যানজটে নাকাল মানুষ-যুগান্তর

তীব্র যানজট

আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে ঘরমুখো পরিবহনের চাপ বেড়েছে। এছাড়া দফায় দফায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় বন্ধ ও সিরাজগঞ্জ অংশে পরিবহন চলাচলে বাধার কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী সাধারণ।অন্যদিকে ঢাকামুখী গরুবাহী ট্রাকের চাপ বাড়ছে। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি যানজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যানজটের ফলে চালক ও ঘরমুখো যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে সকাল থেকে যাত্রীবাহী বাসের থেকে ট্রাকের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই পাড়ের মহাসড়কে গাড়ির চাপ ও যানজটের কারণে দফায় দফায় সেতুতে টোল আদায় বন্ধ রাখছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

করোনাকালে বেড়েছে চার অপরাধ-ধর্ষণ কিশোর অপরাধ সাইবার ও ছিনতাই-বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাকালে দেশে চার ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গবেষণা প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, মহামারী শুরুর পর গত ১৫ মাসে দেশে নারী নির্যাতন, কিশোর অপরাধ, সাইবার অপরাধ ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মহামারী  শুরুর পর দেশে ধর্ষণের মতো অপরাধ সাধারণ সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আর দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর কিশোর বয়সী সন্তানরা অর্থ উপার্জনের আশায় কিশোর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় করোনাকালে ছিনতাইয়ের ঘটনাও আগের চেয়ে বেশি ঘটছে। তবে মহামারীতে দীর্ঘ সময় কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম ঘরে থাকায় সাইবার অপরাধের মাত্রা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি।

ধর্ষণ বেড়েছে

ধর্ষণ : মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর ধর্ষণের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ধর্ষণের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার হার অন্য সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি। বেসরকারি সংস্থা ও পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটি জানা যায়।

বেসরকারি সংস্থা ও পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটি জানা যায়। দেখা যায়, মহামারী শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে বিভিন্ন বয়সী নারী ও কন্যাশিশুর ওপর ধর্ষণের মতো নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। উদ্বেগজনক যে, এ সময়ে প্রাপ্তবয়স্ক নারীর তুলনায় কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ধর্ষণের সঙ্গে ছিল গণধর্ষণের ঘটনাও। আবার ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যাও করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যাও করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ৫৩২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। আর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ১৩৯ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ২৪ জনকে। মহামারীর সময়ে বেপরোয়া এই ধর্ষণের কারণ খুঁজতে গিয়ে সমাজ ও মনোবিজ্ঞানীরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ই এ জন্য দায়ী। তাদের মতে, দুষ্টচক্রের রাহুগ্রাস সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ায় অপরাধীরা বেপরোয়া অবস্থান নিয়েছে। সারা দেশে হঠাৎ করে ধর্ষকদের এই বেপরোয়া আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, মাদকাসক্ত, দুর্বল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, হতাশাগ্রস্ত ও ক্ষমতার কারণে অহংকারী ব্যক্তিরা ধর্ষণের মতো অপকর্ম ঘটাচ্ছে। আবার সমাজে পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতাও ধর্ষণের ঘটনা উসকে দিচ্ছে। মূলত মহামারীতে জবাবদিহি কম থাকার কারণে ধর্ষণের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সালমা আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা মহামারীতে চলাচলের শিথিলতার কারণে অনেক ধর্ষণ মামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। মহামারীতে জবাবদিহি কম থাকায় ধর্ষণের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাইবার অপরাধ

সাইবার অপরাধ : মহামারীতে দীর্ঘ সময় কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম ঘরে থাকায় সাইবার অপরাধের মাত্রা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এই সময়ে আগের চেয়ে মানুষ বেশি অনলাইনে কেনাকাটা করায় ক্রেতাদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার করে এখন মাত্রাহীন যৌন হয়রানি ও সাইবার অপরাধ চলছে। হয়রানির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না কেউই। নারী ও শিশু থেকে শুরু করে সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিদেরও টার্গেট করে হয়রানি করছে সাইবার অপরাধীরা। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবের মতো মাধ্যমগুলোকে  বেপরোয়াভাবে সাইবার অপরাধে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে দেশে সাইবার অপরাধগুলোর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভুক্তভোগীই নারী। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় যৌন হয়রানি, বিকৃত যৌনাচার আর যৌন নিপীড়নের মতো অসংখ্য ঘটনা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন  থেকে জানা যায়, প্রযুক্তির অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সাইবার স্পেসে যৌন হয়রানি, যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। গবেষণায় দেখা যায়, যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে ১৫৪ জনের মধ্যে ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী। প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে নারীদের ব্ল্যাকমেল করে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে। কখনো প্রেমিক, কখনোবা স্বামী ব্যক্তিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কাটানো অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিচ্ছে। আবার অনেকে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছে। অনেকে গোপন ক্যামেরায় বাথরুমের চিত্র ধারণ করেও অনলাইনে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফেসবুক ও টুইটারে নারীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো এবং বাজে মন্তব্য করা এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নারীর আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে তাকে ব্ল্যাকমেল করা সাইবার ক্রাইমের নতুন একটি ধরন, যাকে বলা হয় ‘সেক্সটোরশন’। এর মাধ্যমে কারও আপত্তিকর ছবি দিয়ে যৌন হয়রানির নামে চাঁদাবাজি করা হয়। আর টাকা না দিতে চাইলে ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কম বয়সী তরুণ-তরুণীরা এর ফাঁদে পড়ে। ইন্টারনেটে এ ধরনের অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের বছর বছর মানসিক অশান্তির মধ্যে থাকতে হয়।

ছিনতাই : আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় করোনাকালে ছিনতাইয়ের ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনায় পেশা হারিয়ে নতুন অনেক কিশোর ও তরুণ যেমন ছিনতাই করছে, একইভাবে পুরনোরাও এই অপরাধ ঘটাচ্ছে। আবার গ্রেফতারের পর সহজেই জামিন পাওয়ায় এই অপরাধীদের থামানো যাচ্ছে না। ইদানীং নতুন করে ‘টানাপার্টি’র আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের অপরাধে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা ভুক্তভোগী হচ্ছে। বেশ কিছুদিন আগে ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের গাড়ি থেকে তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি টান দিয়ে নিয়ে যায় এক দুর্বৃত্ত। ছিনতাইকৃত মোবাইলটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া সম্প্রতি মিরপুরের পল্লবী আবাসিক এলাকায় ভোরে নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার সময় রাস্তা ফাঁকা পেয়ে রিনা আক্তার নামের এক কর্মজীবী নারীর ব্যাগ টান দিয়ে দৌড়ে পালায় আরেক দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় ব্যাগ টানাটানিতে ভুক্তভোগী নারী হাতে আঘাত পান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনায় আগের তুলনায় রাস্তাঘাট ও সড়কে যানবাহন এবং গাড়ির উপস্থিতি কম থাকায় একটু অসতর্ক হলেই ছিনতাইকারীরা প্রাইভেট কার, রিকশা ও মোটরসাইকেল থেকে ছোঁ মেরে মোবাইল ও ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে। মূলত রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ী, বিজয় সরণি ও পান্থপথে টানাপার্টির উৎপাত বেশি। পুলিশ বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারী ও টানাপার্টির সদস্যকে গ্রেফতার করলেও জামিনে বেরিয়ে এই অপরাধীরা আবারও পুরনো কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

কিশোর অপরাধ : করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কিশোর অপরাধের ঘটনাও বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে। মহামারীতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে কিশোর অপরাধীরা সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য তারা ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ভূমিকা রাখছে টিকটকও। সম্প্রতি গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় দুই পরিবারের সদস্যদের ওপর নৃশংস হামলার সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানি’র পৃষ্ঠপোষক বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী এবং নীরব ওরফে ডন নীরবসহ গ্রুপটির ১২ জন সদস্যকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)। এ ছাড়া ১৭ জুন ঢাকার মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি ফোল্ডিং চাকু, ১টি চাপাতি, ৫০ পিস ইয়াবাসহ এলাকায় ভীতি ছড়ানোর জন্য তিন কিশোর অপরাধীকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেফতার কিশোররা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ইভ টিজিংসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।

প্রাপ্ত তথ্যে, কিশোর অপরাধীদের বয়স ১৪ থেকে ১৮। অথচ এই বয়সেই ধারালো ও স্বয়ংক্রিয় দেশি-বিদেশি অস্ত্র চালানো শিখে নিয়েছে। কেউ চুরি আবার কেউ ছিনতাই করছে। বয়সে ছোট হলেও পেশাদার সন্ত্রাসীর মতোই তাদের আচরণ। প্রয়োজনে মানুষ খুন করতেও তাদের হাত কাঁপে না। কিশোর বখাটেদের কেউ কেউ যৌন হয়রানিতে জড়াচ্ছে, আবার তারা সক্রিয় আছে সাইবার অপরাধেও।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, সাধারণত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের কাজেই প্রভাবশালীরা কিশোর অপরাধীদের বেশি ব্যবহার করছে। বিগত কয়েক বছরের অপরাধের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবন ও মাদক বিক্রির মতো অপরাধগুলোতেও শিশু-কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে। জানা যায়, পাড়া-মহল্লা ও বস্তির ছিঁচকে সন্ত্রাসী থেকে শুরু করে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান, এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং ভাসমান পথশিশু ও টোকাইরা কিশোর অপরাধে জড়াচ্ছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কিশোররাই অপরাধে জড়াচ্ছে বেশি।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায়  পোদ্দার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে শিশুরা সহিংস অনেক কনটেন্ট দেখে ফেলছে। বর্তমানে শিশুরা যে ভিডিও গেম খেলছে এর বেশির ভাগই সহিংসতামূলক। এ গেমগুলো শিশুদের সহিংস করে তুলছে। শিশুর ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠার দুটো ক্ষেত্রের একটি হচ্ছে পরিবার, অন্যটি তার স্কুল। আশঙ্কা করছি বেশ কিছু পরিবারের অভিভাবকের শিশুর সুষ্ঠু মানসিক বিকাশের জন্য যে ভূমিকা পালন করার কথা, তা তারা করছেন না। আবার বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাও অনেক প্রতিযোগিতামূলক। সেখানে ব্যক্তিত্ব ও জীবন গঠনের শিক্ষা অনুুপস্থিত। এসব বিষয়ই শিশুকে সহিংস করে তুলছে।’

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

গুজরাটে মমতা, এবার মোদির গড়েও শোনা যাবে ‘দিদি’র ২১ জুলাইয়ের বার্তা-সংবাদ প্রতিদিন

মমতা ব্যানার্জী

বাংলায় পদ্ম ফোটাতে প্রচার চালিয়েছিলেন মোদি-শাহ জুটি। ছুটে এসেছিলেন গেরুয়া শিবিরের তাবড় নেতারা। এবার খোদ মোদি-শাহের ‘গড়’ গুজরাটে সংগঠন গড়ছে তৃণমূল। এমনকী, ২১ জুলাই সেখানে শোনানো হবে ‘দিদি’র বক্তৃতাও। সেই প্রস্তুতিও শুরু করে ফেলেছে ‘সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, গুজরাট প্রদেশ’।বিজেপির বাঘা-বাঘা নেতাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কার্যত একা লড়াই করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে দলে ভাঙন, বিশ্বস্ত সৈনিকদের দলবদল, কোনও কিছুই তাঁর জনপ্রিয়তায় দাগ কাটতে পারেনি। বরং গত দুবারের চেয়ে বেশি সংখ্যক আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন তৃণমূল নেত্রী। তার পর থেকেই ‘বাঙালি প্রধানমন্ত্রী’, ‘দিদি এবার হবে’-র মতো স্লোগান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধিতায় ভরসাযোগ্য মুখ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মমতা। আর সেই কথা মাথায় রেখেই জাতীয়স্তরে রাজনীতিতে গুরুত্ব বাড়াতে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল।সেই স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবেই এবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল নেত্রীর ২১ জুলাইয়ের ভাষণ পৌঁছে দিতে কোমর বাঁধছে ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্যে দিল্লিতে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে তৃণমূল নেত্রীর ভাষণ সম্প্রচার করার ঘোষণা করা হয়েছে। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ, বিপ্লব দেবের ত্রিপুরা, হিমন্ত বিশ্বশর্মার অসম-সহ ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাবেও তাঁর ভাষণ সম্প্রচার করা হবে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই তালিকায় জুড়েছে গুজরাটের নামও। সে রাজ্যের ৩৩-এর মধ্যে ৩২ জেলাতেই বড় স্ক্রিনে ভারচুয়ালি হাজির থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলাইবাহুল্য, মোদি-শাহের ‘আপন রাজ্যে’ কড়া ভাষায় তাঁদেরই আক্রমণ শানাবেন তৃণমূলনেত্রী।

মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক কি বাংলাদেশের নাগরিক?

মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক কি বাংলাদেশের নাগরিক? প্রশ্ন তৃণমূলের, হিন্দু তো বটে’ বলল বিজেপি-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক কি বাংলাদেশের নাগরিক। রাজ্যসভায় এ প্রশ্ন এবং অভিযোগ তোলেন রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বোরা। প্রশ্ন উঠেছে প্রতিমন্ত্রীর নাগরিকত্ব নিয়ে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লেখা হয়েছে। গতকাল বিষয়টি নিয়ে নেটমাধ্যমে সরব হয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এবং ব্রাত্যবসু।

নিশীথ প্রামাণিক ও মোদি

মোদির কাছে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে  কোনও বিদেশি নাগরিক দেশের মন্ত্রী হলে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। জবাবে রাজ্য বিজেপির বক্তব্য কুৎসা  না রটিয়ে প্রমাণ করুন। তবে তারা একথাও বলেছে- তর্কের খাতিরে অভিযোগ মেনে নিলেও এটা তো ঠিক যে, নিশীথ  হিন্দু। বিজেপি মনে করে, সব হিন্দুই ভারতীয়। 

মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্য, বাড়ছে আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা-আজকালের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,কলকাতা হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জমা দেওয়া ভোট পরবর্তী হিংসা’র রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতাদের নাম। যা দেখে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার।এরই মধ্যে  রাজ্য সরকার আইনি পরামর্শ নিয়েছে, মানবাধিকার কমিশনের হিংসার রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ  করে আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৮


 

ট্যাগ