হে আল্লাহ! আলীর সঙ্গে আবারও সাক্ষাত ছাড়া আমার মৃত্যু দিও না!: মহানবী (সা)
হযরত আলী (আ.): মহানবীর (সা) প্রিয়তম শ্রেষ্ঠ উত্তরসুরি
পবিত্র ১৩ রজব তথা আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)'র পবিত্র জন্ম-বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছি অশেষ শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা মুবারকবাদ। হযরত আলী-আ. ছিলেন বিশ্বনবী (সা.)'র পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তিনি ছিলেন মহানবীর (সা) পরপরই তাঁর ঘোষিত মুসলমানদের প্রধান নেতা বা উত্তরসূরি।
এ ছাড়াও হযরত আলী (আ) ছিলেন মহানবীর (সা) আপন চাচাতো ভাই এবং প্রিয়তম কন্যা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমার স্বামী ও বেহেশতি যুবকদের দুই নেতা ইমাম হাসান ও হুসাইনের পিতা।
বিশ্বনবী (সা.)'র একটি হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী আলী(আ.)-কে পুরোপুরি বা পরিপূর্ণভাবে চেনেন কেবল আল্লাহ ও তাঁর সর্বশেষ রাসূল (সা.) এবং আল্লাহ ও তাঁর সর্বশেষ রাসূল (সা.)-কে ভালভাবে চেনেন কেবল আলী (আ.)।
হযরত আলী (আঃ) ছিলেন সেই ব্যক্তিত্ব যার সম্পর্কে রাসূলে পাক (সা:) বলেছেন, মুসার সাথে হারুনের যে সম্পর্ক তোমার সাথে আমার সেই সম্পর্ক, শুধু পার্থক্য হল হারুন (আঃ) নবী ছিলেন, তুমি নবী নও।
মহানবী (সা:) আরো বলেছেন: হে আম্মার! যদি দেখ সমস্ত মানুষ একদিকে চলে গেছে, কিন্তু আলী চলে গেছে অন্য দিকে, তবুও আলীকে অনুসরণ কর, কারণ, সে তোমাকে ধ্বংসের দিকে নেবে না। -বিশ্বনবী (সা:) আরো বলেছেন:
* আমি আলী থেকে, আর আলী আমার থেকে, যা কিছু আলীকে কষ্ট দেয়, তা আমাকে কষ্ট দেয়, আর যা কিছু আমাকে কষ্ট দেয় তা আল্লাহকে কষ্ট দেয়।
* হে আলী! ঈমানদার কখনও তোমার শত্রু হবে না এবং মোনাফেকরা কখনও তোমাকে ভালবাসবে না।- অনেক সাহাবী এ হাদিসের ভিত্তিতেই মোনাফেকদের সনাক্ত করতেন। রাসূলে পাক (সা:)'র স্ত্রী আয়েশা বিনতে আবুবকর হযরত আলী (আঃ)'র শাহাদতের খবর শুনে বলেছিলেন, "হে রাসূল! তোমার সবচেয়ে প্রিয়পাত্র শাহাদত বরণ করেছেন। আজ এমন এক ব্যক্তি শহীদ হয়েছেন যিনি ছিলেন রাসূল (সা:)'র পর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ।-আর এইসব বাণী থেকে এটা স্পষ্ট যে আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.) ছিলেন বিশ্বনবী (সা.)'র পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব।
আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)'র মহত ও সুন্দর ব্যক্তিত্ব এত বিশাল বিস্তৃত ও এত বিচিত্রময় যে একজন মানুষের পক্ষে তাঁর সব বৈশিষ্ট্য ও পরিধি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করাও সম্ভব নয়। মানুষের মনে উত্তেজনা ও প্রভাব সৃষ্টিতে আমিরুল মু' মিনিন আলী (আ.)'র সুবিশাল ব্যক্তিত্ব ও মহত্ত্ব ইতিহাসে দখল করে আছে অনন্য ও শীর্ষস্থানীয় অবস্থান। বিশ্বনবী (সা.)'র পর এ ব্যাপারে তিনি সত্যিই অপ্রতিদ্বন্দ্বী। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে তথা হিজরি সপ্তম শতকে মুহাম্মাদ ইবনে শাহরাসুব আল-মাজান্দারানি নামের একজন মুসলিম পণ্ডিত ছিলেন। তার লাইব্রেরিতে " মানাকিব" বা "মহত গুণাবলী' শীর্ষক এক হাজার বই ছিল। আর এসবগুলোই ছিল হযরত আলী (আ.)'র মহত গুণাবলী সম্পর্কে লিখা।
ভারত উপমহাদেশের বিশিষ্ট সূফী সাধক ও চিশতিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা খাজা মুঈনউদ্দিন চিশতী (র.) বলেছেন,সমুদ্রকে যেমন ঘটিতে ধারণ করা অসম্ভব তেমনি বর্ণনার মাধ্যমে আলী (আ.)'র গুণাবলী তুলে ধরাও অসম্ভব। হযরত আলী (আ.)'র চরিত্রে আমরা দেখতে পাই একজন দার্শনিকের বৈশিষ্ট্য, একজন বিপ্লবী নেতার বৈশিষ্ট্য, একজন সূফী শায়খের বৈশিষ্ট্য এবং নবী-রাসূলদের মধ্যে যেসব বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ থাকে তারও অনেক বৈশিষ্ট্য।
হযরত আলী (আ) রাতে যখন তিনি আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হতেন তখন আল্লাহ ছাড়া আর কোনো কিছুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক থাকত না। আবার দিনে ছিলেন জনগণের মাঝে কর্মমুখর। দিনের বেলায় জনগণ তাঁর দয়া ও সততায় মুগ্ধ হতেন আর তাঁর উপদেশ, পরামর্শ ও জ্ঞানপূর্ণ কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। অন্যদিকে রাতে আকাশের তারকারাজি দেখত হযরত আলী (আ.) কিভাবে আল্লাহর ইবাদতে অশ্রু বিসর্জন করছেন আর আকাশ তাঁর প্রেমপূর্ণ মুনাজাত শুনত।
হযরত আলী (আ.) একাধারে একজন জ্ঞানী, প্রাজ্ঞ, রহস্যবাদী ব্যক্তি, সমাজের নেতা, আত্মসত্তা বিসর্জনকারী ব্যক্তি, মুজাহিদ, বিচারক, শ্রমিক, একজন বাগ্মী ও লেখক। তাঁর সব আকর্ষণীয় গুণ নিয়ে তিনি ছিলেন পূর্ণতার সব অর্থেই একজন পূর্ণাঙ্গ মানব।
আলী (আ.) এমন এক নাম যাঁর নাম উচ্চারণ ও যাঁর বরকতময় জীবনের আলোচনা মানুষের ঈমানকে তাজা করে দেয়। রাসূল (সা.) বলতেন, আলীর দিকে তাকানোও ইবাদত।
হযরত আলী (আ.)'র আকাশ-ছোঁয়া বীরত্ব ও মহত্ত্ব কেবল মুসলিম কবি, সাহিত্যিক বা মনীষীদেরই প্রভাবিত করেনি, অমুসলিম পণ্ডিতরাও তার সুবিশাল ব্যক্তিত্বের ব্যাপকতায় অভিভূত ও হতবাক হয়েছেন। তাঁর মহত্ত্ব ও উদারতার প্রশংসা করে আর ডি ওসবোর্ন বলেছেন, আলী (আ.) ছিলেন মুসলমানদের ইতিহাসের সর্বোত্তম আত্মার অধিকারী সর্বোত্তম ব্যক্তি।
ওয়াশিংটন আরভিং বলেছেন, "সব ধরনের নীচতা ও কৃত্রিমতা বা মিথ্যার বিরুদ্ধে আলী (আ.)'র ছিল মহত সমালোচনা এবং আত্মস্বার্থ-কেন্দ্রিক সব ধরনের কূটচাল থেকে তিনি নিজেকে দূরে রেখেছিলেন।"
ঐতিহাসিক মাসুদির মতে, রাসূল (সা.)'র চরিত্রের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিল যার ছিল তিনি হলেন আলী (আ.)। আমীরুল মুমিনীন আলী সম্পর্কে মাওলানা রুমী লিখেছেন,
“সাহসিকতায় তুমি ছিলে খোদার সিংহ তা জানি/পৌরুষত্বে আর বদান্যতায় কি তুমি তা জানেন শুধুই অন্তর্যামী।”
হযরত আলীর (আ.) ফজিলত ও উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে মহানবীর যত প্রামাণ্য হাদিস রয়েছে অন্য কোনো সাহাবি সম্পর্কে এত হাদিস নেই। মহানবী (সা) আলী (আ)-কে তাঁর জ্ঞান নগরীর ত্বোরণ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন, আমি যাদের নেতা ও অভিভাবক আমার পরে আলীই তাদের অভিভাবক বা মাওলা। অর্থাৎ আমি যেমন উম্মতের মাওলা বা প্রধান তেমনি আমার পরে আলীই উম্মতের প্রধান। বিদায় হজের পর গ্বাদিরে খুম নামক স্থানে তিনি এই সম্মাননা প্রদান করেন আলীকে। সেদিন তিনি আলীর মাথায় নিজের পাগড়ি পরিয়ে দেন এবং তিন দিন ধরে চলা উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুসলমানদের সবাই আলী-আ.'র হাতে আগাম বাইয়াত করেছিলেন। মহান আল্লাহর নির্দেশে মদিনার পবিত্র মসজিদের সঙ্গে যুক্ত সব দরজা বন্ধ করে দেয়া হলেও একমাত্র মহানবী (সা.) ও হযরত আলীর বাসস্থানের দরজাকে এর ব্যতিক্রম রাখা হয়।
মদিনায় সব মুহাজির একজন আনসার বা কোনো বিশিষ্ট সাহাবির সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং মহানবী-সা নিজে আলীর সঙ্গেই এই ভ্রাতৃত্ব-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
একবার মহানবীর কাছে বেহেশতি পাখির গোশত পাঠানো হয় মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। এ সময় মহানবী সা. বলেছিলেন, হে আল্লাহ আমার উম্মতের মধ্যে আপনার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিকে আমার কাছে পাঠান যাতে আমি তাকে নিয়ে এই গোশত খেতে পারি। দেখা গেল কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হন হযরত আলী। কাফির শক্তিগুলোর সম্মিলিত বাহিনীর মোকাবেলায় খন্দক বা আহযাবের যুদ্ধে হযরত আলীর তরবারির একটি বিশেষ আঘাতকে মহানবী-সা. জিন ও ইনসানের সমস্ত ইবাদতের চেয়েও বেশি মূল্যবান বলে মন্তব্য করেছিলেন। কাফির পক্ষের প্রধান যোদ্ধাকে আলী-আ. ওই আঘাতে ধরাশায়ী করেন। ওই প্রধান যোদ্ধাকে হারাতে না পারলে গোটা ইসলামের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসত। ওই মল্ল যুদ্ধকে গোটা শিরকের সঙ্গে গোটা ইসলামের লড়াই বলেও মহানবী উল্লেখ করেছিলেন।
হযরত আলী ছিলেন মহানবীর জীবদ্দশায় সংঘটিত ইসলামের প্রায় প্রতিটি যুদ্ধের প্রধান বীর। খাইবারের দুর্গগুলো বিশেষ করে কামুস দুর্গ বিজয়ে মুসলিম সেনাপতিদের একে একে ব্যর্থতার পর মহানবী-সা. বলেছিলেন, কাল আমি এমন একজনের হাতে মুসলিম বাহিনীর নেতৃত্ব তুলে দেব যাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালবাসেন এবং সেও আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালবাসে।- হযরত আলীর নেতৃত্বে মুসলমানরা ওই যুদ্ধে জয়ী হন এবং যুদ্ধের এক পর্যায়ে হযরত আলী কামুস দুর্গের অত্যন্ত ভারী লৌহ-দ্বার উপড়ে ফেলে তা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ করা হয় পরে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তা নাড়াতেও সক্ষম হননি।
মহানবীর হিজরতের রাতে আলী-আ. মহানবীর বিছানায় শুয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রিয় নবীজীর জীবন রক্ষা করেছিলেন। হযরত আলীই পুরুষদের মধ্যে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মুসলমান।
হযরত ইবনে আব্বাস বলেছেন, আলীর চারটি গুণ ছিল যা অন্য কারো ছিল না। আরব ও অনারবের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি রাসূলের সাথে সালাত আদায় করেছেন। দ্বিতীয়ত: প্রত্যেক জিহাদেই তাঁর হাতে ঝাণ্ডা থাকতো। তৃতীয়ত: লোকেরা যখন রাসূলের কাছ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যেত তখনও আলী তাঁর পাশেই থাকতো। চতুর্থত: আলীই রাসূল (সা:)কে শেষ গোসল দিয়েছিলেন এবং তাঁকে কবরে শায়িত করেছিলেন।
উমর ইবনে খাত্তাব আলী (আ.)'র পরামর্শ ও জ্ঞানগত সহযোগিতার কাছে নিজের ঋণ স্বীকার করে বলেছেন,"আলী ইবনে আবি তালিবের মত আরেকজনকে গর্ভে ধারণ ও প্রসব করার ক্ষমতা নারীকুলের কারো নেই। আলী না থাকলে উমর ধ্বংস হয়ে যেত।"
মহানবী যে কোনো সফরে গেলে বিদায় নেয়া উপলক্ষে সবার শেষে সাক্ষাৎ করতেন হযরত আলীর সঙ্গে এবং সফর থেকে ফিরে এসে সবার আগে সাক্ষাৎ করতেন তাঁর সঙ্গে। কখনও কখনও তিনি বলতেন, হে আল্লাহ! আলীর সঙ্গে আবারও সাক্ষাত ছাড়া আমার মৃত্যু দিও না!
রমজানের প্রাক্কালে এক ভাষণে মহানবী-সা হযরত আলীর শাহাদাতের ভবিষ্যদ্বাণী করে খুব কাঁদেন। পবিত্র হজের সময় কাফির মুশরিকদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের আয়াত নাজিল হলে মহানবী-সা. মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত আলীকে হজ-সমাবেশে ওই আয়াত পড়ে শোনানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। হযরত আলীও মহানবীর মতই শৈশবে কখনও মূর্তিপূজা করেননি এবং জীবনে কখনও মদ পান করেননি। অথচ অন্য অনেক বড় সাহাবি এই গৌরবের অধিকারী নন। মহানবী নিজেই শিশু আলীকে ছয় বছর বয়স থেকে নিজের কাছে রেখে লালন-পালন করেন এবং তাঁকে যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তোলেন।
জীরার ইবনে হামজা তাঁর প্রিয় নেতার গুণাবলী তুলে ধরতে গিয়ে বলেছিলেন, "আলীর ব্যক্তিত্ব ছিল সীমাহীন, তিনি ক্ষমতায় ছিলেন দোর্দণ্ড, তাঁর বক্তব্য ছিল সিদ্ধান্তমূলক, তাঁর বিচার ছিল ন্যায়ভিত্তিক, সব বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ছিল, তাঁর প্রতিটি আচরণে প্রজ্ঞা প্রকাশিত হত। তিনি মোটা বা সাদামাটা খাদ্য পছন্দ করতেন এবং অল্প দামের পোশাক পছন্দ করতেন। তাঁর প্রতি সশ্রদ্ধ অনুভূতি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সম্বোধন করে কিছু বলতে ও প্রথমে কথা বলতে আমরা ভয় পেতাম না। তাঁর হাসিতে মুক্তা ছড়িয়ে পড়তো। তিনি ধার্মিকদের খুব সম্মান করতেন। অভাবগ্রস্তের প্রতি খুবই দয়ালু ছিলেন। এতিম, নিকট আত্মীয় ও অন্নহীনকে খাওয়াতেন, বস্ত্রহীনে বস্ত্র দিতেন ও অক্ষম ব্যক্তিকে সাহায্য করতেন। তিনি দুনিয়া ও এর চাকচিক্যকে ঘৃণা করতেন । আমি আলী ইবনে আবি তালিবকে গভীর রাতে বহুবার মসজিদে দেখেছি যে তিনি সাপে কামড় খাওয়া মানুষের মত আর্তনাদ করে শোকাহত লোকের কেঁদে বলতেন, হে দুনিয়া, আমার কাছ থেকে দূর হও! আমাকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করো না!" .. এরপর জীরার বলেন, আলী (আঃ)'র অনুপস্থিতিতে আমি সেই মহিলার মতো শোকাহত যার সন্তানকে তার কোলে রেখে কেটে ফেলা হয়েছে।
শাহাদত-প্রেমিক আলী(আ.) যখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত, তাঁর সঙ্গীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, সবাই কাঁদছে, চারিদিকে ক্রন্দনের শব্দ, কিন্তু আলী (আ.)-এর মুখ হাস্যোজ্জ্বল। তিনি বলছেন, “আল্লাহর শপথ! আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম কি হতে পারে যে, ইবাদতরত অবস্থায় শহীদ হব?”
পবিত্র কাবা-ঘরে জন্ম-নেয়া আলী (আ.) ছিলেন সব ধরণের মানবিক মূল্যবোধের ময়দানে বিজয়ী বীর। মানবতার সবগুলো ময়দানেই তিনি ছিলেন পরিপূর্ণ মহামানব।
সবশেষে হযরত আলী (আঃ)’র জন্মদিন উপলক্ষে সবাইকে আবারও শুভেচ্ছা জানিয়ে এ মহাপুরুষের কয়েকটি একটি অমূল্য বাণী তুলে ধরছি: “প্রকৃত জীবন হচ্ছে মৃত্যুবরণের মাধ্যমে জয়ী হওয়া। আর প্রকৃত মৃত্যু হলো বেঁচে থেকেও নিকৃষ্ট ব্যক্তির অধীনে থাকা।”#
পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।