বসনিয়া-গণহত্যার ঘাতকরা কেন যথাযথ শাস্তি পায়নি?
https://parstoday.ir/bn/radio/world-i94406-বসনিয়া_গণহত্যার_ঘাতকরা_কেন_যথাযথ_শাস্তি_পায়নি
আজ থেকে ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ১১ জুলাই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের সামনে হত্যা করা হয় ৮ হাজারেরও বেশি বসনিয় মুসলমানকে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সংঘটিত সবচেয়ে বড় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান। ডাচ শান্তিরক্ষীদের নিস্ক্রিয়তার মুখে ও গ্রীক সেচ্ছাসেবী বাহিনীর সহায়তায় সার্বরা এই গণহত্যা চালায়। ।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ১০, ২০২১ ২০:৪৫ Asia/Dhaka
  • সার্বদের হাতে নিহত বসনীয় মুসলমানদের একটি গণকবরের ছবি
    সার্বদের হাতে নিহত বসনীয় মুসলমানদের একটি গণকবরের ছবি

আজ থেকে ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ১১ জুলাই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের সামনে হত্যা করা হয় ৮ হাজারেরও বেশি বসনিয় মুসলমানকে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সংঘটিত সবচেয়ে বড় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান। ডাচ শান্তিরক্ষীদের নিস্ক্রিয়তার মুখে ও গ্রীক সেচ্ছাসেবী বাহিনীর সহায়তায় সার্বরা এই গণহত্যা চালায়। ।

তারা ত্রিশ হাজার বসনিয়কে তাদের ঘরবাড়ি থেকেও বিতাড়িত করে। সার্বরা ১৯৯৫ সালের জুন মাসে জাতিসংঘের রক্ষীদের কোনো বাধা বা প্রতিক্রিয়া ছাড়াই সেব্রেনিৎসা ও জেপা শহরটি দখল করে নেয়। জাতিসংঘের ৮১৯ নম্বর প্রস্তাবে অনুযায়ী সেব্রেনিৎসা শহরটি নিরাপদ অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সার্বরা শহরটি দখল করে সেখানকার হাজার হাজার বেসামরিক মুসলমানকে হত্যা করে ও হাজার হাজার নারীকে ধর্ষণ করে। নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তাদের বেশিরভাগই ছিল বৃদ্ধ ও যুবক। রাতকো মিলাদিচের নেতৃত্বাধীন সার্ব বাহিনী এই গণহত্যা চালায়।

২০০৪ সালে যুদ্ধ-অপরাধ আদালতের রিপোর্টে বলা হয়, ২৫ থেকে ত্রিশ হাজার বসনীয় মুসলিম নারী ও শিশুকে জোর করে অন্য অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্থানান্তরের সময় তাদের এক বিপুল অংশ ধর্ষণ ও গণহত্যার শিকার হয়। নানা সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা গেছে, এইসব হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধ অভিযানের ফসল। বসনিয়ার যুদ্ধ চলাকালে সার্ব সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা কখনও কখনও কোনো একটি অঞ্চলে হামলা চালানোর পর সেখানকার সমস্ত পুরুষকে হত্যা করতো অথবা অপহরণ করতো এবং সেখানকার নারীদের ধর্ষণের পর তাদের হত্যা করতো। তারা বহুবার গর্ভবতী নারীর পেট ছুরি দিয়ে কেটে শিশু সন্তান বের করে ওই শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছে মায়ের চোখের সামনে এবং কখনওবা আরো অনেকের চোখের সামনেই। আরো মর্মান্তিক ব্যাপার হল এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ও নৃশংস পাশবিকতার বহু ঘটনা ঘটানো হয়েছে হল্যান্ডের শান্তিরক্ষীদের চোখের সামনেই। এমনকি মাত্র ৫ ছয় মিটার দূরে যখন সার্ব সেনারা এইসব পাশবিকতা চালাতো তখনও হল্যান্ডের শান্তিরক্ষীরা কেবল বোবা দর্শকের মতই নীরব থাকতো ও হেঁটে বেড়াতো।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও জাতিসংঘ আজও বসনিয়ার গণহত্যার নায়কদের যথাযথ বিচার করতে সক্ষম হয়নি। নরপিশাচ রাতকো মিলাদিচের বিচারের প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে জাতিসংঘের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও নিজেকে কলঙ্কিত করেছে। মানবাধিকারের সমর্থক হওয়ার দাবিদার মার্কিন সরকার ও ব্রিটেনও বসনিয়ায় গণহত্যা ঠেকানোর কোনো চেষ্টাই করেনি। বরং ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জন মেজর বলেছিলেন, ইউরোপে একটি নতুন মুসলিম দেশের আবির্ভাবকে সহ্য করবে না লন্ডন।

গণহত্যায় নিহত বসনিয়রা মুসলমান ছিল বলেই তাদের ওপর হত্যাযজ্ঞের যথাযথ বিচার হয়নি বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।#

পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/১০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।