দেশবাসীকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
ঢাকায় আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস উড়ানোর সময় কয়েকটি স্থানে আগুন
খ্রিষ্টীয় নতুন বছরকে বরণ করার উৎসবে মেতে আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস উড়াতে গিয়ে রাজধানীতে গতরাতে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের সুত্রপাত হয়েছে। আগে থেকে পুলিশের নির্দেশনা থাকায় উন্মুক্ত স্থানে জড়ো হতে না পারলেও নিজেদের ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নগরবাসী।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা জানান, নববর্ষ বরণে বিভিন্ন এলাকায় ছাদ থেকে ফানুস ওড়ানো হয়েছিল। সেগুলো বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আগুন লেগে যায়। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, ডেমরা, সূত্রাপুর, লালবাগ ও কেরানীগঞ্জে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাদের কর্মীরা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুনে কারও হতাহত হওয়ার বা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, রাত বারোটা বাজার আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বাড়ির ছাদে আতশবাজি ফোটাতে শুরু করেন, ফানুসও ওড়ান। পুরান ঢাকার ধোলাইখাল বড় মসজিদের সামনে একটি পাঁচ তলা ভবন থেকে কিছু ফানুস উড়িয়েছিলেন ভবনের বাসিন্দারা। এর একটি ওপরে না উঠে, নিচে নেমে যায়। পরে সেটি ভবনের বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে জড়িয়ে গেলে আগুনের সূত্রপাত হয়। সেই আগুন থেকে ভবনটির পাশের গাড়ির টায়ারের কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিস দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, আগুন নিভিয়ে ফেলে।
আগুন লাগার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে বাসা থেকে নিচে নেমে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেন। এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাত ২টার পরে বাসিদারা ঘরে ফেরেন।
ঘটনাস্থলে থাকা সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ফানুস থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পুরান ঢাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতো।
সন্ধ্যার পরে ফাঁকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মাঝ রাতে আতশবাজি
২০২১ সালের শেষ সূর্যাস্তের আগে–পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের জমায়েত হলেও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নির্দেশনার কারণে সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্যদের স্থান ত্যাক করে চলে যেতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথগুলোতে ছিল পুলিশের চেকপোস্ট। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেকটাই ফাঁকা হয়ে পড়ে৷
ঘড়ির কাঁটা ১২টায় পৌঁছাতেই টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ ও সামনে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা ফানুস ওড়ান। একই সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসিসংলগ্ন ফটক থেকে ছোড়া হয় আতশবাজি। আতশবাজির আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে টিএসসি এলাকা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
এদিকে, খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নববর্ষ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন তাঁরা।
নতুন বছরে বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। বাণীতে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে বিশ্বব্যাপী করোনার নতুন অতি সংক্রামক ধরন ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। একজনের আনন্দ যেন অন্যদের বিষাদের কারণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নববর্ষ উদ্যাপনের আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উন্নত-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নতুন বছরে মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার, সব সংকট দূরীভূত এবং সবার জীবনে অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।