নির্বাচন কমিশন গঠনের বিল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে উত্থাপন, রিজভীর প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিধান সম্বলিত বিল-২০২২ আজ (রোববার) জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি উত্থাপন করেন। বিরোধীদল বিএনপি এটাকে একটি বিতর্কিত বিল বলে আখ্যায়িত করে তা প্রাত্যাহারে দাবি জানান।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জবাবে বলেছেন, বিএনপি’র দাবি মত আইন হবে না। কারণ জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বিলটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তাবিত বিলে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করার জন্য ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের বিধানের রাখা হয়েছে। প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতি মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষিক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিককে নিয়ে ছয় জন সদস্যের সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে কমিটি গঠনের পর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতি বরাবরে সুপারিশ পাঠানোর বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিকদল ও পেশাজীবী সংগঠনের কাছে এ বিষয়ে নামের সুপারিশ আহ্বান করতে পারবে বলে বিলে উল্লেখ হয়েছে।
বিলে অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতার বিধানের প্রস্তাব করা হয়। যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, বয়স ন্যূনতম ৫০ বছর হতে হবে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধাসরকারি বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারের অযোগ্যতার বিষয়গুলো নির্ধারণের বিধানের প্রস্তাব করা হয়।
কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই রাষ্ট্রপতিকে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আইনটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন ও পাস করে গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য হাতে চার সপ্তাহ সময় রয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন- ২০২২’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মুজিবকোট পরা লোকেরাই থাকবে সার্স কমিটিতে: রিজভী
এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নতুন সার্চ কমিটির সবাই আওয়ামী চেতনার হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটি গঠনে যে আইন সেটি তো পরিচালনা করবেন সরকার এবং তার নির্বাহী বিভাগ। যারা আইন প্রণয়ন করবেন তারা তো আওয়ামী চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকারের কথা মত আইন প্রণয়ন করবেন।
তিনি আরও বলেন, যে সার্চ কমিটি হবে সেটি হবে আওয়ামী- বাকশালী চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ। মুজিব কোট পরা লোকেরাই সরকারের সার্চ কমিটিতে থাকবেন। এই সার্চ কমিটি হারিকেন দিয়ে খুঁজে খুঁজে মুজিব কোট পড়া লোকদের বের করে আনবে।
রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।