ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২ ১৮:৫৫ Asia/Dhaka

বিপাকে পড়েছে সাভারের গোলাপ চাষীরা। এবারের শীতের মৌসুমে সবুজ পাতার  ফাঁকে কাঁটার আড়ালে ফুটছে না তরতাজা গোলাপ। পাঁপড়িসহ বিবর্ণ ফুলেরা নিস্তেজ হয়ে ঝড়ে পড়ছে মাটিতে।

একদিকে করোনার আঘাত, তার ওপর রোগের আক্রমণে দিশেহারা সাভারের গোলাপ রাজ্য বলে পরিচিত সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, ভাগ্নিবাড়ি, মোছতাপাড়া, নয়াপাড়া এসব গ্রামের আট শতাধিক ফুল চাষী।

তুরাগ নদীর কোলঘেঁষে সাভারের এ গ্রামগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ ফুলের চাষা শুরু হয় ৯০ দশকে। গ্রামগুলো পরিচিত পায় 'গোলাপ গ্রাম' হিসেবে। সে  অপরূপ দৃশ্য দেখতে ফুলপ্রেমীরা ছুটে আসে গোলাপ রাজ্যে। গোধূলী লগ্নে স্থানীয় ফুলে বাজারে বসে ফুলের পাইকারী বাজার। বদলে যায় গ্রামের ফুলচাষীদের ভাগ্য।

তবে এবার চাষে বিপর্যয়ের কারণে চাষীদের মুখের হাসি মিলিয়ে গেছে। চাষীরা জানিয়েছেন, গত ডিসেম্বর শেষ দিকে বৃষ্টির হবার পর থেকে গোলাপ বাগানে রোগের বিস্তার শুরু হয়। গাছে ফুল আসলেও ঝড়ে পড়ে। গাছের পাতা থেকে শুরু করে ফুলের পাঁপড়ি পর্যন্ত কেমন সাদা হয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিছু বাগানে গাছের পাতা ঝড়া, আগা ও ডগা মরা রোগও দেখা গেছে। প্রায় ৮০ শতাংশ ফুল চাষির বাগানেই এমন করুণ অবস্থা।

সাভারে বাণিজ্যিক ফুল চাষের অর্থনীতির বিষয়ে সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজিয়াত আহমেদ রেডিও তেহরানকে জানান, সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নেই মূলত ফুলের চাষ হয়। এখানে ৩০০ একর জমিতে ফুল চাষ হয়। এর মধ্যে ২৫০ একরে শুধু গোলাপ লাপ চাষ হয়। বছরে এখানে ফুলের বাণিজ্য থেকে আয় হয় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। তবে এবছর গোলাপ চাষে বিপর্যয়ের কারণে অন্তত ১০-১২ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।  

কৃষিবিদ নাজিয়াত আহমেদ জানান, সাভারে গোলাপ বাগানে রোগের বিষয়টি জানার পর ইতোমধ্যে গোলাপ গ্রাম ঘুরে কৃষি কর্মকর্তা ও গবেষকরা মাটিসহ বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে রোগটি শনাক্ত করা গেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কৃষককে পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এখন অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

কৃষি গবেষকদের পরামর্শ অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ছত্রাক প্রতিরোধে থিওভিট দুই গ্রাম ও এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করার জন্য বলা হয়েছে। সাথে সাথে রিডোমিল গোল্ড নামে ওষুধ গাছের শিকড়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রিডোমিল গোল্ড ৬ গ্রাম ওষুধ ও এক লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে। অনেকে ভালো ফল পেয়েছেন। কেউ কেউ সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করেননি বলে ফল পায়নি।

এ ছাড়া, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আর শীতের সময় বৃষ্টির পানি গাছের গোড়ায় যাতে দীর্ঘদিন জমে না থাকে সেজন্য গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ