সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, নতুন করে বন্যার আশঙ্কা
বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে বন্যাদুর্গতরা বাড়িঘরে ফিরতে না ফিরতেই নতুন করে বন্যার আতঙ্কে দেখা দিয়েছে। গত ১৪ দিন ধরে বন্যার পানির সঙ্গে যুদ্ধ করছেন জেলার ৯০ ভাগ পানিবন্দি মানুষ। বন্যা কবলিত গ্রামবাসীরা গবাদিপশু, ধান চাল ও নিজেদের জীবন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যেতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে জেলার সব নদ-নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে মানুষ।
জানা গেছে, গতকাল (বুধবার) মধ্যরাত থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। পৌর শহরের কাজীর পয়েন্ট, বিহারী পয়েন্টসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির জানিয়েছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আগের বন্যার তুলনায় এবারে পানি এতো হবে না। তিনি বলেছেন, বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো প্রস্তুত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী ২৪-৪৮ ঘন্টায় বাংলাদেশের উত্তাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে। আবহাওয়া পূর্বাভাস ও ফের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বানভাসি মানুষের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, দুই দফা বন্যায় জেলার লক্ষাধিক কাচা-আধা কাচা, টিন শেডের ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের ঘরে বেড়া, টিন, বাঁশের বানের পানিতে ভেসে গেছে। হাওরের ঢেউয়ে তছনছ হয়ে গেছে। বন্যা পরবর্তী পুনবার্সন নিয়ে দুশ্চিন্তায় বানভাসি পরিবার। এক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ ও মেঘালয়ে পাহাড়ি বৃষ্টিপাতে সুরমাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনও সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হওয়ার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।