সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমে কুরবানির চামড়া বিক্রি, ব্যবসায়ীরা হতাশ
(last modified Mon, 11 Jul 2022 11:28:51 GMT )
জুলাই ১১, ২০২২ ১৭:২৮ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে গত বছরের তুলনায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার মূল্য ৭ টাকা বেশি নির্ধারণ করে। তাতে এবারের পবিত্র ঈদুল আজহায় কুরবানি করা গরুর চামড়ার দাম কিছুটা বাড়তি পাওয়ার আশা করছিলেন কুরবানিদাতা, মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। তবে শেষ পর্যন্ত সে আশায় গুঁড়েবালি। অনেকটা গতবারের মতোই দামেই বিক্রি হয়েছে লবণবিহীন গরুর চামড়া।

তবে চামড়ার পাইকারি ব্যবসা কেন্দ্র পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের চামড়ার বাজার তেমন ভালো নয়। মোকামে চামড়া আসছে না। বিভিন্ন কোম্পানির লোকজন খুচরা বাজার বা মাদ্রাসা থেকে সরাসরি চামড়া কিনছে।

পোস্তার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বড় আকারের গরুর চামড়া ৩৫-৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। একেকটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ গড়ে ৩০০ টাকা খরচ হয়। গত বছরের তুলনায় এবার লবণের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে।

ওদিকে, বাইরের জেলাগুলোতে পশুর চামড়া আরও কম দামে বিক্রি হবার খবর পাওয়া গেছে। উত্তরাঞ্চলের প্রধান চামড়া বিক্রয় কেন্দ্র নীলফামারীতে কুরবানির পশুর চামড়া ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় বিক্রি হবার খবর পাওয়া গেছে। 

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে ট্যানারি মালিকেরা চামড়ার দাম দেয় না। লবণযুক্ত মালামাল হওয়ায় উপায়হীন হয়ে তাদের কাছে ধর্না দিতে হয়। বলতে গেলে একরকম জিম্মি হয়ে ব্যবসা করতে হয়। তাছাড়া এবারে লবনের দামও বেড়েছে। গত বছর ৭০ কেজি ওজনের লবণের বস্তার দাম ছিল ৬৫০ টাকা। এবারে তা কিনতে হচ্ছে ১০৬০ টাকায়। তাই ছাগলের চামড়া সংরক্ষণ করতে গেলে এবারে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত পুঁজি হারাবে।

সৈয়দপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ও মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্সের মালিক মো. আজিজুল হক বলেন, আজ থেকে ৮-১০ বছর আগে সৈয়দপুর থেকে কুরবানি ঈদে ১০ কোটি টাকার চামড়া রফতানি হতো। ট্যানারি মালিকদের কাছে আটকে থাকা পুঁজি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীর দৌরাত্মে বর্তমানে এক থেকে দেড় কোটিতে নেমে এসেছে।

এ বিষয়ে নীলফামারী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল আলম জানান, এখনো উত্তরাঞ্চলের চামড়ার বড় ব্যবসার কেন্দ্র হচ্ছে নীলফামারীর সৈয়দপুর। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছে থাকা বকেয়া টাকা তুলতে না পেরে ঈদে চামড়া কেনা নিয়ে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন। আগে কাঁচা চামড়া যেভাবে সবাই রফতানি করতে পারত সেই ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ