রাষ্ট্রপক্ষ-দুদকের বক্তব্য সুইস রাষ্ট্রদূতের কথার সঙ্গে সাংঘর্ষিক: হাইকোর্ট
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখা নিয়ে তথ্য জানানোর বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের বক্তব্য রাষ্ট্রকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। এখন সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য প্রত্যাহার করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
আজ (রোববার) বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনের ওপর শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেছেন, এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবী যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তাতে প্রমাণিত রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সাংঘর্ষিক।
আদালত আরও বলেন, ‘তাঁর (রাষ্ট্রদূত) বক্তব্যে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আপনাদের (রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক) বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিভ্রান্তি দূর হবে। অর্থ জমাকারীদের বিষয়ে আপনারা তথ্য চেয়েছেন। তারা দিচ্ছে না। দিলেও শর্ত সাপেক্ষে। আপনারা তথ্য চেয়েছেন ও পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন, পরিষ্কার করেছেন। মানুষ মূল্যায়ন করবে সত্যি বলেছেন কি না।’
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন। দু’দকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক বা এসএনবির ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে জানান, গত বছর বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। সুইজারল্যান্ডে কালো টাকা রাখার কোনো নিরাপদ ক্ষেত্র নয়। সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য তথ্য চায়নি।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নজরে এলে পরদিন, (১১ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে নির্দেশ দেন।
এদিকে, গত ১২ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ‘সুইস রাষ্ট্রদূত মিথ্যা বলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ফিন্যান্স সেক্রেটারি আমাকে আগে জানিয়েছিলেন, তারা তথ্য চেয়েছিলেন, সুইস ব্যাংক উত্তর দেননি।’
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আজ আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়ে জানান, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে মোট তিন বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। #
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।