শ্রীমঙ্গলে চা-শ্রমিকদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i112380-শ্রীমঙ্গলে_চা_শ্রমিকদের_স্কুলপড়ুয়া_সন্তানদের_মানববন্ধন_ও_প্রতিবাদ_সভা
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চলমান চা-শ্রমিকদের ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানেরা আজ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা আয়োজন করেছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে স্থানীয় কয়েকটি বিদ্যালয়ের ক্লাস বর্জন করে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী উপজেলার খেজুরিছড়া চা-বাগানের দুর্গামন্দিরের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়ে তাদের দাবি তুলে ধরে। এই শিক্ষার্থীদের মা-বাবারা চা-বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
আগস্ট ২৫, ২০২২ ১৬:১২ Asia/Dhaka
  • শ্রীমঙ্গলে চা-শ্রমিকদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা

দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চলমান চা-শ্রমিকদের ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানেরা আজ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা আয়োজন করেছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে স্থানীয় কয়েকটি বিদ্যালয়ের ক্লাস বর্জন করে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী উপজেলার খেজুরিছড়া চা-বাগানের দুর্গামন্দিরের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়ে তাদের দাবি তুলে ধরে। এই শিক্ষার্থীদের মা-বাবারা চা-বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের মা-বাবা নিজেরা না খেয়ে আমাদের খাওয়ান। পড়াশোনার জন্য তাঁরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে তাঁরা আর পারছেন না। এখন সবকিছুর দাম বেড়েছে। এখন সংসার চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখন আমাদের পড়াশোনা করানো নিয়ে তাঁরা খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাছাড়া, শ্রমিকেরা যেন তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনা করাতে না পারেন, সে জন্য বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বিভিন্ন বৈষম্যের মধ্যে রেখেছে। পরবর্তী প্রজন্মও যেন সারা জীবন চা-বাগানের ‘দাস’ হয়ে জীবন কাটাতে পারে, সেটাই বাগান কর্তৃপক্ষের চাওয়া বলে দাবি করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী সঞ্জিত তাঁতী বলে, ‘আমরাও এই দেশের নাগরিক। কিন্তু এ দেশে আমাদের মা-বাবা দাসের জীবনযাপন করছেন। আমরাও তা-ই করছি। কেন এই বৈষম্য? আমরা সুন্দর বাংলাদেশের চিন্তা করি। আমাদের চা-শ্রমিক মা–বাবারা এত কষ্ট করবেন, কিন্তু ন্যায্য মজুরি পাবেন না, সেটা আমরা মেনে নিতে পারব না। যদি দাবি মানা না হয়, তাহলে আমরাও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

এদিকে, ধর্মঘটের ১৩তম দিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সব কটি চা-বাগানে কাজ বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকেরা দাবি আদায়ে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করছেন। আজ সকালেও উপজেলার খেজুরিছড়া চা-বাগান, কালীঘাট চা-বাগান, রাজঘাট চা-বাগানসহ বিভিন্ন বাগানে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

খেজুরিছড়া চা–বাগানের শ্রমিক সাজু বেগম বলেন, ‘আমরা আজ ১৭ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ঘরে খাবার নেই। না খেয়ে রয়েছি। আমরা ১২০ টাকা মজুরি পাই, তা দিয়ে সংসার চলে  না। সংসারের খরচ অনেক, জিনিসের দাম বেড়েছে। আমরা এত পরিশ্রম করেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে চেয়ে আছি। তিনি যে সিদ্ধান্তে দেবেন, সেটাই মেনে নেব।’

প্রসঙ্গত, ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও পরে ১৩ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছেন চা-শ্রমিকেরা। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও সেটা মানছেন না সাধারণ শ্রমিকেরা। বাগানে বাগানে ঘুরে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধও জানাচ্ছেন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।