প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানো হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেলে নিহত ১, বান্দরবান সীমান্তে আতঙ্ক
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে তুমব্রু এলাকায় গতরাতে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের মৃত্যু ও পাঁচজন আহত হওয়ার ঘটনায় সীমান্ত অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল নো ম্যান্স ল্যান্ডে রোহিঙ্গা শিবিরে বিস্ফোরিত হয়ে মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বাংলাদেশের ভেতরের একটি বাড়ির উঠানেও গোলা এসে বিস্ফোরিত হয়। এছাড়া, তমব্রু হেডম্যান পাড়ার ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে মিয়ানমারের ভেতরে ‘মাইন’ বিস্ফোরণে বাংলাদেশি এক তরুণের পা উড়ে যায়। আজও (শনিবার) বিকট গোলার শব্দ শোনা গেছে। নিরাপত্তার কারণে গ্রাম ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ৩৫টি পরিবার। এদিকে, ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রটি পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার জেলার কুতুপালং বিদ্যালয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানো হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিকে, আজ রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপ ও হতাহতের ঘটনায় মিয়ানমারকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না। শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানো হবে।
এর আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি বুলেট এসে পড়েছে। ৩ সেপ্টেম্বরসকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। পুরো পরিস্থিতি শান্তভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেশে নিযুক্ত মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তিন দফায় ডেকে এনে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপরও মিয়ানমারের সীমান্ত লঙ্ঘন থেমে থাকেনি।
জাতীয় পার্টির প্রতিবাদ
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকর উদ্যোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের তেমন কোন সাফল্য নেই। শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন জি এম কাদের।
মিয়ানমার সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সবাইতে সংযত আচরণ করতে হবে। এ সময় তিনি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।