ভূমিকম্প প্রতিরোধে ভবন তদারকি শুরু জরুরি; দেশেই স্থাপিত যাচ্ছে ভবন পরীক্ষার ল্যাব
(last modified Sun, 09 Apr 2023 11:01:25 GMT )
এপ্রিল ০৯, ২০২৩ ১৭:০১ Asia/Dhaka

সম্প্রতি তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে। পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছে। ১৮৯৭ সালে আসামে একবার বড় ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছিল। কোনো এলাকায় বড় ভূমিকম্প হলে এর ১০০ বছরের মধ্যে আবার সেখানে বড় ভূমিকম্প হতে পারে। তবে এই ভূমিকম্প প্রতিরোধে ও ঝুঁকির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে ৪০ থেকে ৫০টি কোম্পানির ভবন তদারকের ভালো সক্ষমতা আছে। তাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।

রাজউক, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ও সিটি করপোরেশন দেশে নির্মিত ভবনের অনুমোদন দেয়। কিন্তু দেশে প্রায় ৫০টি ভালো প্রতিষ্ঠান আছে, যারা শুধু ভবন নির্মাণের কাজ করে থাকে। তাদের দক্ষতা অনেক বেশি। পাশের দেশ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ভবন তদারকের কাজ করছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশেও সে কাজটি শুরু করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রাজউক ৬ লাখ ভবনের মধ্যে মাত্র ৬০টি ভবনের অকুপেন্সি সনদ দিয়েছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ও সিটি করপোরেশন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এখনই ভবন তদারকের কাজ শুরু করতে পারে। এখানে সরকারের কোনো ব্যয় নেই। এসব বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। কারণ যেকোনো দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ। দুর্যোগ সাড়া প্রদান কার্যক্রমে ১ টাকা খরচ করেল তা দুর্যোগোত্তর সাড়াদানে ১০ টাকা খরচ কমায়। যুক্তিসংগত কারণেই দুর্যোগ–পূর্ব ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমের ওপর বেশি গুরুত্ব প্রদান করা উচিত। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশে ভূমিকম্প সহনীয় ভবন পরীক্ষার ল্যাব নির্মাণ শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজউকের আরবান রেজিলেন্স প্রজেক্ট- এর প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল লতিফ হেলালী।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, দুর্যোগসংশ্লিষ্ট সরকারি নীতি ও কার্যক্রম ঝুঁকি হ্রাস সহায়ক নয়। ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমের প্রধান উপাদান হলো যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন, গবেষণাভিত্তিক ভবন নির্মাণবিধি প্রণয়ন ও এর বাস্তবায়ন।যা বাংলাদেশের কোনোটিই দৃশমান নয়। তাই উদ্যোগের পরামর্শ দিলেন তিনি।

২০১০ সালের দু‌র্যোগ ব্যযবস্থাপনা আইন দ্বারা ঝুঁকি হ্রাসবান্ধব প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারণে গবেষণাভিত্তিক ভবন নির্মাণবিধি প্রণয়নের সক্ষমতা অর্জিত হয়নি। হালনাগাদ তথ্য সন্নিবেশিত না হওয়ায় বিএনবিসি-২০২০ এখনই হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিএনবিসি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

ইটের তৈরি দেয়াল ভবনের ভূমিকম্পঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অথচ আমরা বেশি ভূমিকম্পসহনীয় সাশ্রয়ী কংক্রিট ব্লকের এখনো তেমন ব্যবহার করছি না। তা ছাড়া সুশাসনের অভাব এবং শ্রেণিস্বার্থ বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) ও ড্যাপসহ অন্যান্য জনবান্ধব বিধি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করছে বলেও মন্তব্য নগর বিশেষজ্ঞদের। #

পার্সটুডে/বাদশা রহমান/আশরাফুর রহমান/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ