সংকটের বছরে ভোটার তুষ্টির বাজেট: প্রস্তুতিতে নানা সীমাবদ্ধতায় বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i123348-সংকটের_বছরে_ভোটার_তুষ্টির_বাজেট_প্রস্তুতিতে_নানা_সীমাবদ্ধতায়_বাংলাদেশের_অর্থ_মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট এমন এক সময় প্রণীত হচ্ছে যখন নানামুখী চ্যালেঞ্জ ও সংকটে বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মন্দার হাতছানি, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, চীনের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় ধীরগতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে খাদ্যশস্য, সার ও জ্বালানি উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং অবরোধ ও পাল্টা অবরোধে সার্বিকভাবে বিশ্বের সব দেশই সমস্যাসংকুল। তাছাড়া এ বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে দেশের জাতীয় নির্বাচন।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
মে ১৮, ২০২৩ ১৭:২১ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট এমন এক সময় প্রণীত হচ্ছে যখন নানামুখী চ্যালেঞ্জ ও সংকটে বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মন্দার হাতছানি, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, চীনের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় ধীরগতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে খাদ্যশস্য, সার ও জ্বালানি উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং অবরোধ ও পাল্টা অবরোধে সার্বিকভাবে বিশ্বের সব দেশই সমস্যাসংকুল। তাছাড়া এ বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে দেশের জাতীয় নির্বাচন।

একদিকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা, অন্যদিকে নির্বাচনপূর্ব বাজেট হিসেবে জনতুষ্টির দিকে লক্ষ্য রেখে এবারের বাজেট প্রণীত হবে বলেই মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৫০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকার। আগে বাজেট প্রণয়নের বিষয়টি অতি গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন হতো। বাজেট সংসদে পেশের পূর্বে এর খুঁটিনাটি জানা সম্ভব হতো না। কিন্তু বেশ ক’বছর ধরে বাজেট আলোচনার শুরুতেই এটি জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী- আসন্ন বাজেটে এডিপি বা উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ থাকছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি হবে ২ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে গড় মূল্যস্ফীতি প্রায় ৮ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রয়েছে ক্রমনিম্নগতি। টাকার মান প্রায় ২৫ শতাংশ অবমূল্যায়িত হয়েছে। জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট পূর্ণ ক্যাপাসিটিতে চলছে না। গৃহস্থালি ও শিল্পে বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিয়মিত। এ পরিস্থিতিতে সবদিক বিবেচনায় উচ্চাভিলাষী বাজেট প্রণয়ন না করে একটি বাস্তবমুখী সুষম বাজেট প্রণয়ন করাই উত্তম বলে ভাবেছেন অর্থ খাত বিশ্লেষকরা।

বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য দেশি-বিদেশি উৎস হতে ২ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে দেশের ব্যাংকগুলো থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৮৩ হাজার কোটি টাকা ঋণপ্রাপ্তির সম্ভাবনা হিসাব করা হয়েছে। জিডিপির ৬ শতাংশ বাজেট ঘাটতি হিসাব করে ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয় ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার (৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা) চেয়ে ৭২ হাজার কোটি টাকা বেশি।

এমন পরিস্থিতিতে গেল বছরের বাজেটে কোভিড কালীনব্যয়সহ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় থাকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন পরিকল্পনা সচিব সৎজিত কর্মকার। এদিকে, উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ বেশি থাকলেও তা খরচ করতে পারছে না মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে ৩৭-৪০ শতাংশ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন হয়, সেখানে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৩২ শতাংশ।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, উন্নয়ন কাজে যদি বরাদ্দ না বাড়ে তা হলে তো উন্নয়ন হবে না। তাই বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দ কম থাকলে অর্থায়নের অভাবে কাজ এগোবে না। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোও একই কাজ করে। আমরাও উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি বাড়ানোর জন্যই বরাদ্দ বাড়িয়েছি।#

পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/আশরাফুর রহমান/১৮