মে ২০, ২০২৩ ১৬:৪০ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের বাজারের অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা অনেকটাই নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন উদ্যোগ, আয়োজন, মজুতদারবিরোধী প্রচার প্রচারণা আর ভোক্তা অধিকারের অভিযানেও ফলাফল প্রায় শূন্য বলেই মন্তব্য ভোক্তাদের। কারণ দেশে লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত এক মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এরমধ্যে গত চার দিনে বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা, যা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।

পেঁয়াজের পাশাপাশি ভোজ্য তেল, চিনি, আটা, ময়দা, ডিম, আদা সবকিছুর দামই বাড়তি। এমনকি চড়া সবজির বাজারও। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। তারা কাটছাঁট করেও সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।

আজ রাজধানীর শান্তিনগর ও কাওরানবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার এ চিত্র পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, বাজার যেন নিয়ন্ত্রণহীন। অসৎ ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে কারসাজি করছেন। গত রমজানের সময় সিন্ডিকেট করে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ানো হয়। একই সময় চিনির বাজার ছিল লাগামহীন। চিনির বাজারের অস্থিরতার মধ্যেই কয়েক দিন আগে বাড়ানো হলো ভোজ্য তেলের দাম। এখন পেঁয়াজের দাম নিয়ে কারসাজি করা হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের পরও বর্তমানে পণ্যটির দাম যেভাবে বাড়ছে, তা অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গতকাল রংপুরে সাংবাদিকদের বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানি করবে সরকার। তিনি বলেন, পেঁয়াজ ও চিনি নিয়ে একটু ঝামেলা চলছে। তবে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হবে।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৯০৫ থেকে ৯৬০ টাকা ও এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবি বাজারদরের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এক মাস আগে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬৮ থেকে ১৭৫ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৮৭০ থেকে ৮৯০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি খুচরা চিনি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়, যা এক মাস আগে ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। আর এক বছর আগে ছিল ৭৮ থেকে ৮২ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ডিমের দামও ।

টিসিবি জানিয়েছে, গত এক মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি আদার দাম ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও আমদানিকৃত আদা ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (ক্যাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেছেন, কৃষকের উপকারের জন্য পেঁয়াজ আমদানি না করার সুপারিশ করেছিল ক্যাব। কিন্তু ভোক্তারা এখন সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। আর কৃষকের কাছেও পেঁয়াজ নাই, পেঁয়াজ মজুতদারদের হাতে, তাই পেঁয়াজ আমদানি হলে দাম কমতে পারে বলে মনে করেন এই ক্যাব নেতা।  একই সাথে দেশীয় কৃষকের স্বার্থে পেয়াজের চাষ মৌসুমে কৃষকদের দাদন মহাজনদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে এ ধরনের সংকট কমতে পারে বলেও মনে করেন ক্যাব সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। #

পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/আশরাফুর রহমান/১৮

ট্যাগ