রবিশস্য আর ফলমূল আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক, বদলে যাচ্ছে কৃষি
(last modified Thu, 14 Sep 2023 13:50:50 GMT )
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩ ১৯:৫০ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের কৃষি দিন দিন নানা পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মধ্য দিয়ে এগুচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রচলিত আবাদ বদলে নতুন নতুন চাষাবাদে নামছেন কৃষকরা। সফলতাও মিলছে তাদের। যেমন ধানের জেলা হিসেবে পরিচিত জেলা দিনাজপুরে, শুরু হয়েছে আনারসের বাণিজ্যিক আবাদ।

এই অঞ্চলে প্রথমবারের মত বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষে সফলতা পেয়েছেন, ফুলবাড়ী উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের চাষী নূরুন্নবী। তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুরে এক বন্ধুর বাড়ী ঘুরতে গিয়ে আনারসের চাষ দেখে উৎসাহিত হন তিনি। পরে ২০২১ সালে সেখান থেকে প্রায় ২৩ হাজার ক্যালেঙ্গা জাতের আনারসের চারা এনে রোপণ করেন।আনারস চাষে কোন প্রকার কীটনাশকের খরচ নেই এবং সেচ ছাড়াই শুধু আগাছা পরিষ্কার ও জৈবিক উপায়ে। এরই মধ্যে আনারস বাজারে বিক্রিও শুরুও করেছেন তিনি চাষী নূরুন্নবী আশেখী বাবুল।

বাবুলের আনারস চাষের খবর শুনে, স্থানীয় অনেক কৃষকই দেখতে আসছেন এবং নিচ্ছেন পরামর্শ। দিনাজপুরের ফুলবাড়ির স্থানীয় কৃষি-কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার মনে করেন, পরিবর্তিত কৃষি অর্থনীতির ইঙ্গিত হল প্রচলিত চাষ বদরে নতুন চাষে আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া। এসব কাজে, চাষীদের সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, কুষ্টিয়ায় বিশ্বখ্যাত তামাক চাষে ভাটা পড়ছে। লাভ-লোকসানের হিসেব কষে তামাক ছেড়ে রবিশস্য আর ফলমূল আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক। কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে কুষ্টিয়ার মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে আবাদ হতো শুধুই তামাকের। তবে লাভ-ক্ষতির হিসেব আর সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ দুয়ে মিলে দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করেছে।

মিরপুরের বারুইপাড়া ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক তুহিন হোসেন কয়েক বছর আগেও তামাক আবাদ করতেন। সেই জমিতে কুলের বাগান করেছেন তিনি। তামাক আবাদে যা আয় হতো তার তুলনায় কয়েক গুণ আয় বেড়েছে তুহিনের।তুহিনের মতোই তামাক ছেড়ে সবজি আবাদ করছেন কৃষক ফারুক হোসেন। কমেছে পরিশ্রম, বেড়েছে আয়। তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব কৃষকরা বুঝতে পেরেছেন বলেই দৃশ্যপটও বদলাচ্ছে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন,ফল, ভুট্টা, শীতকালীন সব্জি, সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করছে। পাশাপাশি কিছু বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও কাজ করছে মাঠ পর্যায়ে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা দিশা’র কৃষিবিদ জিল্লুর রহমান বলেন, সারাবছর চাষের জন্য এক বিঘা জমিতে তাদেরকে বীজ, সার, ট্রেনিং এগুলো তাদের সংস্থার পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে।

কৃষি বিভাগের হিসেব বলছে, নীলফামারী জেলায় অনাবাদি ৪১২ হেক্টর জমিতে শুরু হয়েছে, শাক সবজিসহ নানা ফসলের আবাদ। স্কুল ও চর এলাকার অনাবাদী জমিসহ, ব্যবহারের আওতায় এসেছে, সড়ক মহাসড়কের দুই পাশ। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়কের পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রোপণ করা হয়েছে, সজিনার গাছ। অধিক দামের এই সবজি গাছ লাগাতে পেরে খুশি, কৃষকরা। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবুবকর সাইফুল ইসলাম বলছেন,পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও শতাধিক রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে এই সজিনা। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে,অনাবাদি জমিগুলোকে ব্যবহারের আওতায় আনার কাজ শুরু হয়েছে। #

পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/১৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।  

 

 

ট্যাগ