নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি, শাপলা চত্বরেই অনড় জামায়াত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই আগামী ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ করতে চায় বলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাতে (ওসি) দেওয়া চিঠিতে জানিয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভির সই করা চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়াপল্টনস্থ বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনেই আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না।
এর আগে গতকাল পল্টন থানা থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, যদি নিরাপত্তাজনিত কারণে বিএনপিকে নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া যায়, সেজন্য তারা যেন আরও দুটি বিকল্প জায়গার নাম জানায়।
একই চিঠিতে আরও ছয়টি বিষয়েও জানতে চান পল্টন থানার ওসি। সেগুলো হলো—সমাবেশে লোকসমাগম কখন শুরু হবে এবং কখন শেষ হবে, কী পরিমাণ লোকসমাগম হবে, সমাবেশটি নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ঠিক কোন কোন স্থান পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, সমাবেশে বক্তব্য প্রচারের জন্য কোন কোন স্থানে মাইক স্থাপন করা হবে, অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করবেন কি না এবং সমাবেশে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে কি না ও হলে তার সংখ্যা কত?
জবাবে দেওয়া চিঠিতে বিএনপি জানায়, তাদের সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হবে এবং মাগরিবের আজানের আগে শেষ হবে, এতে এক থেকে সোয়া এক লাখ লোক হতে পারে, সমাবেশটি পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে, কর্মসূচির জন্য পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত কিছুদূর অন্তর অন্তর মাইক লাগানো হবে, এতে বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন না এবং সমাবেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দলের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন, যার সংখ্যা হবে ৫০০।
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর মতিঝিল শাপলা চত্বরেই মহাসমাবেশ করবে জামায়াত। আর এই মহাসমাবেশ সফলে প্রশাসন এবং দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
আজ (বৃহস্পতিবার) মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান। তিনি বলেন, কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও আলেম-উলামার মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ২৮ অক্টোবর মতিঝিল শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করবে জামায়াত।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী তার সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়ে পুলিশ কমিশনারের নিকট লিখিতভাবে অবহিত করেছে। পক্ষপাতদুষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছে, ‘জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ পুলিশের দায়িত্ব হল শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা, বাধা দেওয়া নয়। তার এই বক্তব্য অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক, এখতিয়ারবহির্ভূত ও বেআইনি। পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।#
এর আগে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর অতীত কর্মকাণ্ড অত্যন্ত জঘন্য। তারা সাধারণ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। পুলিশকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের কোনোভাবেই সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।