তারেক রহমান রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নথি রহস্যজনক: ফখরুল
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i56268
লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী পাসপোর্ট জমা দিয়ে ট্রাভেল পারমিট নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
এপ্রিল ২৪, ২০১৮ ১৩:০৮ Asia/Dhaka
  • মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
    মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী পাসপোর্ট জমা দিয়ে ট্রাভেল পারমিট নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ (মঙ্গলবার) বেলা সোয়া ১১ টার দিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে সাময়িকভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন এবং তা পেয়েছেন। তাকে দেশের আইন অনুযায়ী পাসপোর্ট জমা রেখে ট্রাভেল পারমিট দেয়া হয়েছে। দেশে ফিরতে চাইলে পাসপোর্ট ফেরত পাবেন। কিন্তু তার পাসপোর্ট বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাঠানোর কথা নয়।”

তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের অধীনে তারেক রহমানের জীবন নিরাপদ নয়। তাই বিশ্বের অসংখ্য বরেণ্য রাজনীতিবিদ, সরকারবিরোধী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতোই সাময়িকভাবে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন এবং সঙ্গত কারণেই তা পেয়েছেন। কাজেই তারেক রহমান জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পাসপোর্ট তারেক রহমানের কোনো কাজে লাগছে না যখনই তিনি দেশে ফেরার মতো সুস্থ হবেন তখনই দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতোই পাসপোর্টের জন্য আবেদন জানাতে এবং তা অর্জন করতে পারবেন। কাজেই রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে জমা রাখার জন্য ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র বিভাগ থেকে তারেক রহমানের পাসপোর্ট লন্ডন হাইকমিশনে পাঠানোর যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তার দ্বারা কোনো আইন কিংবা যুক্তিতে প্রমাণ হয় না যে, তিনি নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন।”

তিনি বলেন, দেশের জনগণের কষ্টার্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে লন্ডন সফরকারী বিশাল বহরের একমাত্র অর্জন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সংগ্রহ করা তারেক রহমানের পাসপোর্টের তিনটি পাতা এবং ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র বিভাগের অসংখ্য ভুলে ভরা এক লাইনের রহস্যজনক একটি চিঠির ফটোকপি। এ ধরনের উদ্ভট ধারণাকে তত্ত্ব কিংবা তথ্য হিসেবে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন কিংবা ফেসবুকে প্রচার রাজনৈতিক মূর্খতা এবং উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নথির শুরুতেই ডিপার্টমেন্টের নাম ভুল লেখা হয়েছে। চিঠিতে লেখা আছে, ‘বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি’। কিন্তু হবে ‘হাইকমিশন অব বাংলাদেশ’। এতে বড় করে টেলিফোন নম্বর ও ফ্যাক্স নম্বর দেওয়া আছে, যেটা ‘আনকমন’ (অস্বাভাবিক)। ব্রিটিশ চিঠির মধ্যে এগুলো থাকে না। ‘ডিয়ার স্যার’ লেখার পরিবর্তে ‘ডিয়ার স্যারস’ লেখা আছে। যিনি সই করেছেন, তার কোনো নাম নেই। এসব বিবেচনায় চিঠি নিয়ে যথেষ্ট রহস্য রয়েছে।পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (শাহরিয়ার আলম) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাসপোর্ট ও নাগরিকত্বের বিষয়ে যে চিঠি দিয়েছেন, এটি অত্যন্ত রহস্যজনক। কারণ এ চিঠিতে ১৩টি মারাত্মক ভুল আছে, যা ব্রিটিশরা কোনোভাবেই করতে পারেন না।

তারেক রহমান

তিনি বলেন, “তারেক রহমান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান। তিনি একজন সম্মানিত নাগরিক। তার বিরুদ্ধে সরকার ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচার বন্ধের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।

সম্প্রতি লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার আলম বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। তিনি পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন।

এ বক্তব্যের পর গতকাল লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ারকে আইনি নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট বলে উল্লেখ করেন। নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে শাহরিয়ার আলম জাতির কাছে বা তাঁর কাছে ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নোটিশের ঘটনা প্রকাশের পর গতকাল বিকেলে গুলশানের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী-কন্যা তাঁদের পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমর্পণ করেছেন। সেখান থেকে ওই পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। পাসপোর্টগুলো এখন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সেখানে রক্ষিত আছে।”

শাহরিয়ার আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাস

সংবাদ সম্মেলনের পর প্রতিমন্ত্রী গতকাল তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাসপোর্টের ফটোকপি এবং যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরে তাঁর জমা দেওয়া আবেদনের একটি কপি পোস্ট করেন। এসব কপি হ্যাক করা হয়েছে এবং তা উধাও হয়ে গেছে বলে প্রতিমন্ত্রী তাঁর পেজে জানিয়েছেন।

আজ (মঙ্গলবার) একটি পোস্টে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘আমার ফেসবুকের ওপর অনেক অত্যাচার হয়েছে সারা রাত। হ্যাকিং। পোস্ট উধাও। বুঝতেই পারছেন এই বিনিয়োগ কারা করেছে।’#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৪