ফণীতে ১৩ হাজার ৬৩১ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত: কৃষিমন্ত্রী
(last modified Tue, 07 May 2019 11:12:01 GMT )
মে ০৭, ২০১৯ ১৭:১২ Asia/Dhaka
  • কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জা
    কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জা

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে বাংলাদেশের ৩৫ জেলার মোট ৬৩ হাজার ৬৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৬৩১ জন কৃষক। টাকার অংকে এ ক্ষতির পরিমান ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা।

আজ (মঙ্গলবার) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ক্ষয়ক্ষতির এসব তথ্য জানান। কৃষিমন্ত্রী জানান, সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা পুনর্বাসন সহায়তা দেবে। বাজেটে প্রথম থেকেই এ খাতে বরাদ্ধ রাখা হয়েছে।

মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃতীত তথ্য অনুযায়ী ঘূর্নীঝড়ে  আক্রান্ত ফসলি জমির মধ্যে বোরো ধান ৫৫ হাজার ৬০৯ হেক্টর, সবজি ৩ হাজার ৬৬০ হেক্টর, ভুট্টা ৬৭৭ হেক্টর, পাট ২ হাজার ৩৮২ হেক্টর, পান ৭৩৫ হেক্টর।

তবে ফসলের  এ ক্ষয়-ক্ষতির কারনে বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে  জানান মন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের নানা পদক্ষেপে জানমাল ও ফসলের ক্ষতি কম হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আপাতত চাল এবং আলু রফতানি বন্ধ রাখা হবে। তবে, চলতি বোরো ধান যদি কৃষকরা সঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারে, তাহলে আমাদের প্রয়োজনীয় চাল রেখে বাকি চাল রফতানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর বিপদ কাটতে না কাটতেই ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তরের সীমান্ত জেলা  নেত্রকোনার বারহাট্টা ও কলামাকান্দা উপজেলার দুটি ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে পাকা বোরা ফসল। সোমবার বিকেল ৩টার পর থেকে ভাঙা অংশ দিয়ে ফসলি জমিতে পানি ঢুকছে। এতে করে ওই বাঁধের আওতায় অন্তত ২৫০ হেক্টর জমির বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়েছে।

মঙ্গলবার সকালে কলমাকান্দার বড়কাপন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাদিছুজ্জামান জানান, পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলা মধ্যনগর ইউনিয়নের গড়াডুবা হাওরের একটি বাঁধ ভেঙে কলামাকান্দা উপজেলার বড়কাপন ইউনিয়নের মোহিশাসুরা মেদার বিল, জাঙ্গিয়ার বিলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকছে। তবে এসব বিলের আশি ভাগ ফসল কাটা হয়ে গেছে। এছাড়া, বারহাট্টা উপজেলার চিরাম ইউনিয়নের গুমাই নদী সংলগ্ন সিংগুয়াইর বিলের একটি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গুমাই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সোমবার সকাল থেকে ওই নদী সংলগ্ন সিংগুয়াইর বিলের ফসল রক্ষা বাঁধের পুটিয়াজান (পুটাকিয়া) এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এ সময় স্থানীয়রা বাঁশ, কাঠ, মাটি, বস্তা ফেলে বাধা দেয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু বিকেল ৩টার দিকে ওই অংশের অন্তত ২০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়।

বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাইমিনুল রশিদ জানান, ওই ব্লকে মোট ৬৮০ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে বিআর-২৮ জাতের প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। এছাড়া কিছু জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় থাকায় সেগুলোর ফসল ডোবার আশঙ্কা নেই। তবে পানি বাড়তে থাকলে নিচু এলাকার প্রায় ২৫০ হেক্টর জমির উঠতি ফসল হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এদিকে বাঁধ ভাঙার পর থেকে স্থানীয় চাষিরা কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা শুরু করেছেন। কিন্তু এলাকায় এসময়  পর্যাপ্ত শ্রমিক না পাওয়ার কারণে  অনেকে ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারছে না।# 

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/৭

ট্যাগ