দমনপীড়ন বন্ধে নির্দেশ দিন: প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ভিপি নুর
(last modified Mon, 19 Aug 2019 12:04:19 GMT )
আগস্ট ১৯, ২০১৯ ১৮:০৪ Asia/Dhaka
  • সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুরুল হক নুর
    সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুরুল হক নুর

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। গত বছরের ৩০ জুন থেকে গত ১৪ আগস্টের হামলাসহ এ পর্যন্ত মোট আটবার ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এই হামলা থেকে তাঁকে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই রক্ষা করতে পারেন বলে মনে করেন নুর।

গত ১৪ আগস্ট পটুয়াখালীর গলাচিপা থেকে দশমিনা এলাকায় যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে হামলার শিকার হওয়ার পর আজ (সোমবার) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুর এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “গত ১৪ আগস্ট চর বিশ্বাস থেকে আমার বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে পটুয়াখালী-৩ এর সাংসদ এস, এম, শাহজাদা সাজুর নির্দেশে চাঁদাবাজ ও মাদকব্যবসায়ী, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ’র নেতৃত্বে তার ভাই নুরে আলম, লিটু পেদা, আব্বাস পেদা, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফরিদ আহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্য্যসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, স্টিলের পাইপ ও চাপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।”

তিনি আরো জানান, “হামলায় প্রায় ২০-২৫ জনকে আহত, ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং ৮৯ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়। সেসময় রবিউল, ইব্রাহিম, জাহিদ, রিয়াজ ও আমিসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হই। সন্ত্রাসীরা শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি আমাকে চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটি স্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করার জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয় এবং এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে নুরুল হক নুর বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের অযথা হয়রানি বন্ধ করুন এবং যারা হামলার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে অতিদ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিন। কারণ অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করে তার মুখ বন্ধ রাখা যায় না।’

ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় হামলায় নিজের প্রাণনাশের শঙ্কাবোধ করছেন উল্লেখ করে নুর বলেন, ‘প্রতিবার প্রকাশ্যে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটলে ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। পুলিশের নীরব ভূমিকা ছিল সন্ত্রাসীদের সহায়ক।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ডাকসুর ভিপি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ, কিছুদিন আগেও বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আপনি নিজেই বলেছেন, ‘সরকারের সমালোচনা করতে বাধা নেই, দেশে ভিন্ন মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ, ভিন্নমতের মানুষের ওপর দমনপীড়ন বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। দেশে শাসন প্রতিষ্ঠায় দলীয় প্রভাবমুক্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর করুন।”

ক্ষমতাসীন দলের নেতা ছাড়াও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের কাছ থেকেও প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন নুর।

#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।