রাজীবের দুই ভাইকে এক মাসের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ
বাংলাদেশের রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর মারা যাওয়া তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসানের পরিবারকে এক মাসের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দিতে স্বজন পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
আজ (রোববার) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ঠিক করে দিয়েছে আদালত।
আদালতে স্বজন পরিবহনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবুল। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে গত ২০ জুন রাজীবের দুই ভাইকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে বিটিআরসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে ২৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করতে বলা হয়। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে স্বজন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। তার ধারাবাহিকতায় আজ আবেদনটি শুনানির জন্যে ওঠে।
আদালতে স্বজন পরিবহনের আইনজীবী বলেন, ‘মামলার রায় এর মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা লিভ টু আপিল দায়ের করব।’ তখন আদালত বলেন, ‘আপনারা এক মাসের মধ্যে আগে ১০ লাখ টাকা রাজীবের পরিবারকে দিয়ে আসেন। তারপর আপনাদের আবেদন শুনব।’
গত বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারান ছাত্র রাজীব। দুই বাসের চাপায় তাঁর ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই তাঁকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরদিন ৪ এপ্রিল রাজীবের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীবের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। ১৩ দিন চিকিৎসার পর ১৬ এপ্রিল মধ্যরাতে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রাজীব। পরে রাজীবের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করে হাইকোর্ট।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ী গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে। কখনো টিউশনি করে, কখনো বা পার্টটাইম কাজ করে নিজে পড়াশোনা করেছেন এবং দুই ভাইকেও বানিয়েছেন কোরআনের হাফেজ।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।