আবরার হত্যাকাণ্ড: বেকায়দায় সরকার, চলছে দোষারোপের রাজনীতি
(last modified Mon, 14 Oct 2019 14:25:06 GMT )
অক্টোবর ১৪, ২০১৯ ২০:২৫ Asia/Dhaka

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সরকার সমর্থক ছাত্রলীগের নেতাদের দ্বারা সংঘটিত এ হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনও উত্তপ্ত হয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে গায়েবানা জানাজ, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল আয়োজন করেছে। রাজনৈতিক দলের উদ্যোগেও প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন আয়োজন করা হচ্ছে।

আবরার হত্যার ঘটনায় এমন রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ায় সরকারপক্ষ কিছুটা হলেও নার্ভাস হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর সেজন্যই পুলিশ দিয়ে  প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলে বাধা দেয়া হয়েছে। এমনকি বিএনপির সাবেক ছাত্রনেতাদেরকেও কুষ্টিয়ায় আবরারের বাড়িতে গিয়ে শোক জানাতে দেয় নি পুলিশ।

নুরুল হক নুর

ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্র সমাবেশে অভিযোগ করেছেন, ছাত্র সংগঠনসহ দেশের সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন আবরার ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছে তখন সরকার এটাকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করার একটা পাঁয়তারা হিসেবে দেখছে।  

তবে সরকার পক্ষ মনে করছে, আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বুয়েটের প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক অঙ্গনের এসব কর্মসূচির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আর চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার নোবল প্রাপ্তির পথে বাধা সৃষ্টি করতেই এসব করছে প্রতিপক্ষের লোকেরা। ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১৮ অক্টোবর ঢাকায় শোকসভা করার ঘোষণা দিয়েছে।

ড. কামাল হোসেন

এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেছেন, বন্দুক দিয়ে লাখো শহীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে পারবেন না। সময় থাকতে ক্ষমতা ছেড়ে দ্রুত সরে যান। পুনরায় নির্বাচন দিন।

রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আয়োজনে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদে শোক জমায়েতে তিনি এসব কথা বলেন।

কামাল হোসেন বলেন, দেশের জনগণকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিচ্ছে না। সরকার যেভাবে সভা-সমাবেশে বাধা দিচ্ছে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এ সরকার যুবসমাজকে পশু বানাচ্ছে। এসব করে তারা পার পাবে না। তিনি বলেন, যে ঐক্যের প্রক্রিয়া চলছে তাতে জনগণের হাতে ক্ষমতা আসতে বাধ্য।

আ স ম আবদুর রব

এ ছাড়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৯ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতি সম্পন্ন করায় সরকার সংবিধান লংঘনকারী হিসেবে অভিযুক্ত।

রোববার রাজধানীর উত্তরায় তার নিজ বাসভবনে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট ও বিভিন্ন জেলা বারের আইনজীবীদের নিয়ে একটি জোট গঠনের উদ্দেশ্যে এক ঘরোয়া বৈঠকে  তিনি এ মন্তব্য করেন।

রব বলেন, সরকার সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা না করে দল ও ব্যক্তির ইচ্ছাধীন রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অনৈতিকভাবে বেআইনি কাজে প্রশাসন-পুলিশ প্রশাসন ও রাষ্ট্র প্রশাসন ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে; যা খুবই আত্মঘাতী।

তিনি বলেন, এসবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আইনগতভাবেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রের এই ভয়াবহ দুর্দিনে বিবেকবান আইনজীবীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/ আশরাফুর রহমান/১৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ