মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে: তবে হতাশা পিছু ছাড়তে না রোহিঙ্গাদের
(last modified Sat, 21 Dec 2019 12:36:45 GMT )
ডিসেম্বর ২১, ২০১৯ ১৮:৩৬ Asia/Dhaka
  • মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে: তবে হতাশা পিছু ছাড়তে না রোহিঙ্গাদের

রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মুখোমুখি হবার পর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে তাদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সাথে দু’দিন ব্যাপী এক সমঝোতা সংলাপ করেছে।

মিয়ানমার সরকার ও আসিয়ানের নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার কক্সবাজার পৌঁছে সংলাপ শুরু করে। তবে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে প্রতিনিধি দলের দু’দিনের সংলাপ।

সংলাপ শেষে মিয়ানমার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা রোহিঙ্গাদের কী কী সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে সে সম্পর্কে অবহিত করেছেন। এখন ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তাদের।

প্রতিনিধিদল কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রিত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা হিন্দুদের সাথে অলাদাভাবে কথা বলেন।হিন্দুরা জানিয়েছে, যথাযথ নিরাপত্তা পেলে তারা মিয়ানমার ফেরত যেতে রাজী আছে।     

তবে সংলাপে অংশ নেয়া রোহিঙ্গারা জানান মিয়ানমারের এই প্রতিনিধিদল এসেছে শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মহলকে দেখানোর জন্য, আমাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নয়। তারা আমাদেরকে নাগরিকত্বের অধিকার ফিরিয়ে না দিয়ে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি )কার্ড দিয়ে শ্মরনার্থী শিবিরে নিয়ে যাবার প্রস্তাব করেছে। আমরা কেন এনভিসি কার্ড নেব। আমরাতো বাঙালি না। আমরা নাগরিকত্বের অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে নিজ বাসভূমিতে ফিরে যেতে চাই।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে সর্বশেষ সংলাপের ব্যর্থতায় রোহিঙ্গারা যেমন হতাশ  তেমনি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষও ধারণা করছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সমস্যাটি প্রলম্বিত   হতে যাচ্ছে। 

এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমান বলেছেন, সর্বশেষ সংলাপটি ছিল আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি একটি ধাপ্পা। অং সান সূচিকে স্পষ্ট করে বলতে হবে রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিত্বের  মার্যাদা দিয়েই নিজ দেশে ফেরত নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে নতুন পুরনো মিলে এখন বসবাস করছে ১১ লাখের বেশী রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু । এসব ক্যাম্পে বাড়ছে নানা অপরাধমূলক ঘটনা। গত দু’বছরে খুন, মাদক পাচার, অপহরণ সহ  বিভিন্ন অপরাধে  মামলা হয়েছে চার শতাধিক।

ক্রমবর্ধমান এই অপরাধ ঠেকাতেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলির চারপাশে ইতোমধ্যে কংক্রিট পিলারের সাথে কাঁটাতারের বেড়া নির্মানের কাজ শুরু করেছে  বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।    

কক্সবাজার উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল মনসুর জানিয়েছেন,  কাঁটাতারের বেড়া হলে রোহিঙ্গারা খেয়াল খুশি মত বাইরে আসা-যাওয়া করতে  পারবে না।  ফলে তাদের  অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরার  সূযোগ কমে  আসবে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমপর্যায়ে এই কাঁটাতারের বেড়া নির্মান করা হচ্ছে উখিয়া উপজেলায়। এরপর হবে টেকনাফে।কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ফলে ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকায় অপরাধ প্রবণতা কমবে বলে আশা করছে আইনশৃঙ্খলা কর্তপক্ষ এবং স্থানীয় বাসিন্দাগণ।#

 

পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান /এমবিএ/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।  

 

ট্যাগ