ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পরেও গণতন্ত্রের জন্য চিৎকার করতে হয়: ফখরুল
-
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন সময় তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করার জন্য সংগ্রাম করেছে। তরুণ সমাজ, ছাত্রসমাজ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্যে। আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পরেও গণতন্ত্রের জন্য চিৎকার করতে হয়।’
আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ড বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি।
‘বাংলাদেশ সম্পূর্ণরূপে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘মিয়ানমারে সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। পানি সমস্যার সমাধান হয় না, সীমান্তে হত্যার বিচার হয় না, একটা কথা বলতে পারে না। আমরা এখান থেকে উঠে দাঁড়াতে চাই। অতীতে উঠে দাঁড়িয়েছি। এই সমস্যা শুধুমাত্র বিএনপির সমস্যা নয়। গোটা জাতির সমস্যা। সমগ্র জাতি আজকে পরাধীন হয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের সবাইকে উঠে দাঁড়াতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে। সোচ্চার হতে হবে, রাস্তায় নামতে হবে, সমস্ত অর্জনগুলোকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে চেতনার ভিত্তিতে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছিল, সেই চেতনা ধ্বংস করা হয়েছে। সেই গণতন্ত্রকে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অত্যান্ত সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। একটি একদলীয় শাসনব্যবস্থা, একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মনে হয় এই ৬৮ বছর সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়নি, আমরা এই ৬৮ বছরে সংগ্রাম করতে করতে আমরা একটা রাষ্ট্র পেয়েছি, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেজন্য আমি বিশ্বাস করি, এদেশের মানুষ যারা লড়াই করে ভাষা প্রতিষ্ঠা করেছে, একটা স্বাধীন পতাকা নিয়ে এসেছে, তারা পরাজিত হবে বলে বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি আজকে গণতান্ত্রিক যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সে আন্দোলন দেশনেত্রীর মুক্তির মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। তার রাজনৈতিক জীবনের পুরোটাই ত্যাগের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গেছে। এখনো যে তিনি কারাগারে আছেন, সেটাও গণতন্ত্রের জন্যে। তাকে আজ অসুস্থ অবস্থায় অন্ধকার কারাগারে পড়ে থাকতে হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে সকল অর্জন নস্যাৎ করে দিয়ে একটি অকার্যকর ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। আজকে অর্থনীতিকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। দুর্নীতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, পত্রিকা খুললেই দেখি বেসিক ব্যাংকের এমডি ১১০ কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি কিনেছেন। অথচ আজ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিচার হয়, সাজা হয় ২ কোটি টাকার একটা মিথ্যা মামলার জন্য। ১১০ কোটি টাকায় বাড়ি বানিয়েছেন, শত শত কোটি টাকা তিনি লুটপাট করে নিয়েছেন, দুদক তাকে দেখতে পায় না। তাকে এখন পর্যন্ত একটি নোটিশও করা হয়নি। এই হচ্ছে এই দেশের অবস্থা।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবে না। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। আর গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম, সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।