বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার করবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফের ক্ষমতায় গেলে তার দল পিলখানায় সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত করে পুনর্বিচারের উদ্যোগ নেবে।
আজ (মঙ্গলবার) সকালে রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা জানান।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার সুষ্ঠু হয়নি দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আজও প্রকাশ করা হয়নি। এ ঘটনায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারাও বলেছেন- এর বিচার কাজ সুষ্ঠু হয়নি। তাই ফের ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু পুনর্বিচারের উদ্যোগ নেবে বিএনপি।'
ষড়যন্তমূলকভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালালো হয়েছে। আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, স্বাধীনতা বিপন্নের মুখে। গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করার শপথ নিতে হবে।
এর আগে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মির্জা ফখরুল। এরপর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, রুহুল আলম চৌধুরী ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের এ দিনে বিডিআর-এর বিদ্রোহীরা পিলখানা সদর দপ্তরে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। নারকীয় এ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা হয় দুটি মামলা। এর মধ্যে সেনা কর্মকর্তাদের নিহতের ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনে করা হয় হত্যা মামলা। অপরটি হয় বিস্ফোরক আইনে।
দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। ৮ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চার জনকে খালাস দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে আপিল চলার সময়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। খালাস পান ১২ আসামি।
এদিকে, পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আজ শাহাদাতবার্ষিকী পালন করছে বিজিবি। দিনের কর্মসূচিতে রয়েছে পিলখানাসহ বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন, বিজিবির সব মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানীর সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ৩ বাহিনীর প্রধান (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একসঙ্গে) শহিদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এছাড়া, আগামীকাল বুধবার বাদ আসর পিলখানার বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদ ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/ আশরাফুর রহমান/২৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।