বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ
আলিয়া মাদ্রাসার মাঠের আদালত পুড়িয়েছে দুর্বৃত্তরা, বিচারকাজ বন্ধ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বকশী বাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের এজলাস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এজলাস পুড়িয়ে দেওয়ার ফলে বিচারকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ মাঠের অস্থায়ী আদালতে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল।
সকালে বিচারপতি ইব্রাহিম মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আগুনে এজলাস কক্ষ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে বিচারকাজ পরিচালনার উপযোগী কোনো পরিস্থিতি নেই।
আদালত প্রাঙ্গণে এসে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ চিফ প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন বলেছেন, বিচারকাজ চালানোর মতো স্বাভাবিক অবস্থা নেই। বিচারক এখানে উপস্থিত হয়েছেন। এখন ওনার পক্ষ থেকে কী নির্দেশনা আসে সেটার অপেক্ষায় আছি।
আলিয়া মাদ্রাসার মাঠ থেকে আদালত সরাতে বিচারকের গাড়ি আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এদিকে, ঢাকার পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসায় যে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করা হয়েছিল তা সরিয়ে নিতে বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
আজ সকালে মাদ্রাসার কয়েকশ শিক্ষার্থী আলিয়া মাদ্রাসার সামনে সড়কে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীরা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারক ইব্রাহিম মিয়ার গাড়ি আটকে দেন। পরে তারা রাস্তা ছেড়ে দিলে বিচারক তার অফিসে যান। তিনি আদালতে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর আবার বের হয়ে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দাবি, মাদ্রাসা মাঠে বিচারকাজ চলায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। তারা চান আদালত এখানে সরিয়ে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হোক।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ

অন্যদিকে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে তারা এই অবরোধ করেন।
পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অন্তত ৬০০-৭০০ সদস্য শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এ ছাড়াও, তারা বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য দিয়েছেন।।
এসময় বক্তারা বলেছেন য, যতক্ষণ ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হয়, ততক্ষণ তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড়ের আশপাশের সড়কগুলোতে দেখা দিয়েছে যানজট। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।
হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয়। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।#
পার্সটুডে/জিএআর/৯