ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আবাসন প্রকল্প হচ্ছে দুঃস্থ পুনর্বাসন কেন্দ্র
(last modified Tue, 24 Mar 2020 08:41:29 GMT )
মার্চ ২৪, ২০২০ ১৪:৪১ Asia/Dhaka
  • ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আবাসন প্রকল্প হচ্ছে দুঃস্থ পুনর্বাসন কেন্দ্র

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার উপকূলীয় দ্বীপ ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আবাসন প্রকল্প এখন দেশের ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষদের পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেখানে তাদের জীবিকারও ব্যবস্থা করা হবে।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষদের কেউ ভাসানচরে যেতে চাইলে তার নাম স্থানীয় জেলা প্রশাসকদের কার্যালয়ের মাধ্যমে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। মন্ত্রণালয় সে তালিকা যাচাই-বাছাই করে তাদের ভাসানচরে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে। ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক নাগরিকদের তালিকা তৈরি করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষ শহরে থাকতে চান না। তাঁদের অন্য কোথাও হয়তো থাকার জায়গা নেই। এসব মানুষকে আমরা ভাসানচরে থাকার সুযোগ দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল হিসেবে জন্য ভাসানচরের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। জোয়ার-জলোচ্ছ্বাস থেকে এই চরের ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ তৈরি করেছে। এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য সেখানে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তবে রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহ ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার আপত্তির কারণে ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা যায়নি।

ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানন্তরের পূর্বে সেখানে বসবাসকারীদের জন্য প্রাকৃতিক সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা, জীবন জীবিকা ও নিয়মিত যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি করেছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো। তাদের প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে: ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকা;  তাদের নিরাপত্তা, খাবারের সরবরাহ, চিকিৎসাসেবাসহ জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং নৌপথে ভাসানচরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের ব্যবস্থা চালু করা। বর্তমানে নোয়াখালী বা হাতিয়া থেকে ভাসানচরে সরাসরি নৌ-যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা নেই। মেঘনা নদীর মোহনায় সমূদ্র উপকূলে অবস্থিত ভাসানচর এখনো কোনো নৌপথের অন্তর্ভুক্ত নয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এক সভায় ভাসানচরের জন্য নেওয়া প্রকল্পের খরচ ৭৮৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। বাড়তি টাকা ভাসানচর রক্ষাকারী বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো, আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন ও জেটি নির্মাণে খরচ হবে। অতিরিক্ত বরাদ্দ থেকে ভাসানচর রক্ষাকারী বাঁধের উচ্চতা ১০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৯ ফুট করা হবে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৪