করোনা কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সরকারের কেউ না থাকায় জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দুঃখপ্রকাশ
বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার অগ্রদূত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত করোনা শনাক্তকরণ কিট (GR Covid-19 Dot Blot) সফল পরীক্ষা শেষে আজ অনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ (শনিবার) বেলা ১১ টায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মহানগর হাসপাতালে সরকারের ওষুধ প্রশাসনের কাছে এ কিট অনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের আয়োজন করা হলেও তাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত হননি। তবে, মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর একজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদেরকে সিডিসি কনফার্ম করেছিল আসবে, একমাত্র তারাই এসেছে। সিডিসিকেই আমরা দিয়ে দেব। বাকিদেরকে আমরা কালকে সরকারিভাবে প্রত্যেকের অফিসে পৌঁছে দেব। আমাদের দুঃখ, আপনাদের সামনে হস্তান্তর করতে পারছি না।’
এ প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক ডাক্তার জফরুল্লাহ চৌধুরী রেডিও তেহরানকে বলেন, এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে আমন্ত্রণ জানানোর পরও ওষুধ প্রশাসনের কেউ-ই আসেননি। আগামীকাল এ কিট তাদের দপ্তরে পৌঁছে দেবার জন্য তারা বলেছে, সেভাবেই পৌঁছানো হবে। তবে তিনি আশা করেন, সরকারি সংস্থাটি তাদের উদ্ভাবিত কিট তৃতীয় কোনো সংস্থার দ্বারা পরীক্ষা করে দ্রুতই বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমতি দেবে।
করোনা শনাক্তকরণ কিটের ব্যাপারে সরকারের ওষুধ প্রশাসনের অনভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে ডাক্তার জাফরুল্লাহ বলেন, এটা কোন ওষুধ বা চিকিৎসা ব্যবস্থা নয় যে এর কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া থাকবে। এটি বরং রোগ নির্ণয় করার একটি পদ্ধতি মাত্র। তাই এ নিয়ে কালক্ষেপন না করে যত দ্রুত অনুমতি দেয়া হবে ততোই তাড়াতাড়ি জনগণ-এর সেবা পাবেন।
গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত কিটের ব্যবহার উপযোগিতা বর্ণনা করে ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এর কার্যকরিতা খুবই উচ্চমানের। এটির খরচ কম হবে এবং স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণে যেকোনো সাধারণ টেকনিশিয়ান যেকোনো স্থানে নিয়ে গিয়ে এ কিটের সাহায্যে টেস্ট সম্পন্ন করতে পারবেন।
গণস্বাস্থ্য আগেই জানিয়েছে, প্রতিটি কিটের বাজার মূল্য খুবই কম রাখা হবে যাতে ব্যবহারকরী গ্রাহক পর্যায়ে এর মূল্য তিন শ’ টাকার বেশী না হয়।
গণস্বাস্থ্য কিট উদ্ভাবনকারী বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান ড. বিজন শীল জানান, এর কার্যকরিতা তাদের পরীক্ষায় শতভাগ প্রমাণিত হয়েছে। ইতোপূর্বে সিঙ্গাপুরের গবেষণাগারে সফলভাবে সার্স ভাইরাসের কিট উদ্ভাবনকারী এ স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো কিটই ১০০ পার্সেন্ট রোগ শনাক্ত করতে পারে না। আমাদের সবচেয়ে বড় অ্যাসিভমেন্ট হলো এন্টিবডি ও এন্টিজেন– এ দুইটা ফেজ একত্রিত করে আমরা ১০০ ভাগ রোগ শনাক্ত করতে পেরেছি। এই টেস্ট খুব সহজ এবং স্বল্প সময়ে করা যায়। যেখানে পিসিআর পদ্ধতিতে রোগ শনাক্তকরণে দুই দিন সময় লাগে, সেখানে আমাদের এই পদ্ধতিতে টেস্ট সম্পন্ন করতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগে।’
এ বিজ্ঞানী আশা করেন, তাদের এ উদ্ভাবনের মাধ্যম শুধু বাংলাদশ নয় বিশ্বের সকল দেশের মানুষ উপকৃত হবেন।
এ প্রসঙ্গে ডাক্তার জাফরুল্লাহ জানান, ইতোমধ্যে এ কিট পাবার জন্য ইংল্যান্ড থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাদের এ উদ্ভাবন আগে বাংলাদেশের মানুষের কাছে যাবে তারপর দেশের বাইরে যাবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।