করোনার মধ্যেও ঢাকায় আসছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা, মিশুর প্রতিক্রিয়া
ঢাকা ও পার্শবর্তী এলাকার পোশাক কারখানা খোলার খবর পেয়ে বাইরের জেলাগুলো থেকে শত শত নারী-পুরুষ শ্রমিক ঢাকার উদ্দেশ্যে ছুটে আসছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা আজ সকাল থেকেই প্রধান সড়ক এড়িয়ে গ্রামের মধ্য দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটো, টেম্পো, মাইক্রোবাস, মোটর সাইকেল, রিকশা, ভ্যান যে যেভাবে পারছে তারা ঢাকায় পৌঁছার চেষ্টা করছে।
জরুরি রপ্তানি অর্ডার সরবরাহ করার জন্য গত রোববার থেকে সীমিত আকারে পোশাক কারখানা খেলার অনুমতি দেয়া হলেও সব মিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কারখানা খুলেছে। এর মধ্যেই শ্রমিক ছাঁটাই ও বেতন-ভাতা ইস্যুতে গতকালও গাজীপুর, সাভারসহ কিছু এলাকায় শ্রম অসন্তোষ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ।
এর আগে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে পোশাক কারখানা মালিকপক্ষের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে জানিয়ে দিয়েছিলেন ঢাকা ও আশপাশের গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের দিয়েই কারখানা চলবে; বাইরে থেকে শ্রমিক আসবে না। সভায় দূর-দূরান্তে অবস্থানরত শ্রমিকদের কাজে না নিতে মালিকপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়।
‘শ্রমিকদের বেতন ভাতার ৬০ ভাগ পরিশোধ করা হবে’
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান আজ জানিয়েছেন, যেসব পোশাক শ্রমিক এপ্রিল মাসে কাজ করেছেন তাদের শতভাগ ও করোনার কারণে যারা কাজে যোগ দিতে পারেনি তাদের মোট বেতন ভাতার ৬০ ভাগ পরিশোধ করা হবে।
আজ (বুধবার) দুপুরে শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শ্রম ভবনে বৈঠক শেষে এসব কথা জানান তিনি। এছাড়া আসন্ন ঈদ-উল ফিতরের আগে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না বলেও জানান তিনি।
সচল কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের জোর কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি করেন তিনি। এসময় তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা করে কারখানা চালু রাখা যাবে। কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু রেডিও তেহরানকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে একরকম কথা বলা হচ্ছে, মালিকরা করছে অন্যরকম। শ্রমিকদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তাদের ডেকে এনে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে দেদারছে শ্রমিক ছাটাই করছে মালিকরা। শ্রমিকদের পাওনা বেতন না দিয়েই কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থ আইএলও গতকালই এক বিবৃতিতে সতর্ক করে দিয়েছে, দেশে করোনা পরিস্থিতিতে উপযুক্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ছাড়া লক্ষ লক্ষ শ্রমিক ঢাকায় ছুটে এসে কাজে যোগ দিলে আরেক দফা করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।