বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা: মিশ্র প্রতিক্রিয়া
(last modified Thu, 11 Jun 2020 15:47:12 GMT )
জুন ১১, ২০২০ ২১:৪৭ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা: মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দেশের ৫০তম বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত মোট ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার এ বাজেটে ঘাটতি ধরা হচ্ছে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ।

প্রতিবার বাজেটে ঘাটতি সাধারণত পাঁচ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়। তবে এবার করোনার প্রভাবে প্রথমবারের মতো তা ছয় শতাংশ ছুঁয়েছে।

এ বিশাল ঘাটতি মেটাতে সরকার এক লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এ ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে মোট ২৫ হাজার কোটি টাকা নিতে চায় সরকার।

তাছাড়া, ঘাটতি পূরণে সরকারকে বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভর করতে হবে। টাকার অংকে তার পরিমান ধরা হয়েছে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে (সংশোধিত) যা আছে ৫২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধিকে যুক্তিসংগত বলে অভিহিত করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইকোনোমিকস এন্ড পিস-এর প্রেসিডেন্ট ড. আরিফুর রহমান। তিনি রেডিও তেহরানকে বলেন, বিশাল এ ঘাটতি পূরণ কষ্টকর হলেও তা অসম্ভব কিছু নয়। তবে এটা অনেকটাই নির্ভর করছে সরকারের আর্থিক খাতের দক্ষ ব্যবস্থাপনার ওপর। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১০ শতাংশ বেশি।

প্রস্তাবিত বাজেটে চলতি অর্থবছরের চেয়েও বেশি রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হলেও এনবিআর আগেই জানিয়েছে, রাজস্ব আদায়ের এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হবে না তাদের পক্ষে।

অর্থ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে এনবিআরের রাজস্ব আহরণ হবে বড়জোর ২ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায় মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৮০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কম হবে।  এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনাকালে রাজস্ব আদায় পুরোপুরিভাবে সম্ভব নয়। তবে আগামী বাজেটে এনবিআরকে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হবে, সেটা আদায় তাদের জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে পড়বে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

এদিকে, বাম গণতন্ত্রিক জোটের শরীদ দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি করোনাভাইরাস সৃষ্ট সংকট থেকে উত্তরণে সরকারকে আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে।  

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘করোনা মহামারি ব্যক্তি ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে গভীর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে তা কাটিয়ে ওঠাই হবে নতুন অর্থবছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ।’ তিনি দাবি করেছেন, বিত্তবানদের ওপর বেশি কর আরোপ করতে হবে। সম্পত্তি অনুযায়ী কর ধার্য করতে হবে। সর্বোপরি  কালো টাকা, অপ্রদর্শিত আয়সহ বিদেশে পাচার করা অবৈধ অর্থ সম্পদ উদ্ধারে নীতি-কৌশল ঘোষণা করতে হবে। এটা কার্যকর করতে পারলে সরকারের ঘাটতি পূরণ অনেক সহজ হবে। #

পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ