করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে আক্রান্ত এক লাখ ছাড়াল; মৃত্যু আরো ৩৮ জন
(last modified Thu, 18 Jun 2020 10:53:46 GMT )
জুন ১৮, ২০২০ ১৬:৫৩ Asia/Dhaka
  • করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে আক্রান্ত এক লাখ ছাড়াল; মৃত্যু আরো ৩৮ জন

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আজ এক লাখ ছাড়িয়েছে।সরকারি হিসেবে আজ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩৮০৩ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২২৯২ জনে। তাছাড়া, এই সময়ে আরো ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৪৩ জনে।

আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। ব্রিফিং এ প্রথমে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বক্তব্য রাখেন মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। তাই অসতর্ক হলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে এই ভাইরাস মোকাবেলা করা কঠিন। এছাড়া করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় যখন যেমন প্রয়োজন হবে তখন কৌশলগত কারণে রেড জোন ঘোষণা করা হবে।

আরো এক চিকিৎসকের মৃত্যু

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাভারের‌ এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রফিকুল হায়দার (৫২) মারা গেছেন। তিনি হাসপাতালে ডায়াবেটোলজিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গতকাল বুধবার রাতে গুরুতর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ডা. রফিকুল হায়দারকে মিরপুরের বাসা থেকে দ্রুত এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে তিনদিন আগে তিনি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই নমুনা পরীক্ষা করান। রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসার পর থেকে তিনি বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। বুধবার রাতেই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ডা. রফিকুল হায়দারের জানাজা শেষে তাকে রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

গাজীপুরে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে

রাজধানী ঢাকার পার্শবর্তী গাজীপুরের  শিল্পাঞ্চলে  লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গাজীপুরে চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। আর চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে আড়াই হাজারের বেশি। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ হাজার ৫৮২ জন, তারপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কালিয়াকৈর উপজেলা যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০৯ জন।

নমুনা পরীক্ষায় নানা ভোগান্তি আর রিপোর্ট পেতে বিলম্বের কারণে এই সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি না মানা আর পোশাক কর্মীদের অসচেতনায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তারা।

ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গাজীপুর মহানগর ও জেলার পাঁচটি উপজেলার ২১টি অঞ্চলকে  ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে । এ ছাড়া ১২টি ইউনিয়ন ‘ইয়েলো জোন’ এবং ১৬টি ইউনিয়ন ‘গ্রীন জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানিয়ৈছেন, করোনা মোকাবিলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আর ব্যাপকহারে সংক্রমণ ঠেকাতে এখন জোনভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন । তিনি বলেন, ‘করোনা পরীক্ষার জন্য এখানে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

প্রতি জেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবীতে হাইকোর্টে রিট

করোনো রোগী শনাক্ত করতে প্রতি জেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে।

জনস্বার্থে আজ (বৃহস্পতিবার) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন ইমেইলে রিটটি করেন। রিটে স্বাস্থ্য এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন তার রিট আবেদনে উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে সারাদেশে করোনাভাইরাসে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যেকটা জেলা শহরে পিসিআর ল্যাব না থাকায় জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে অন্য জেলায় পাঠানো হচ্ছে এবং রিপোর্ট আসতে অনেক ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত কি না, তা চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যদি কেউ সংক্রমিত হয়ে থাকেন তাহলে তার ক্ষেত্রে আইসোলেশন বা তার চিকিৎসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে না, যার ফলে এই ভাইরাসের ব্যাপক বিস্তারের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।#

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ