সংকটে সমাধানে চীন-মিয়ানমার-বাংলাদেশের বৈঠকের চীনা প্রস্তাব! রাজি বাংলাদেশ তবে..!
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে কেবল আশ্বাসই দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজ
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশকে কেবল আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তাদের নিজ দেশে ফেরানোর কার্যকর কোন উদ্যোগ না নিয়ে বরং কিছু ত্রাণ সহায়তা দিয়ে দায় সারতে চাইছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রোহিঙ্গাদের সহায়তায় দাতা সংস্থার আঞ্চলিক সম্মেলনে তাই বাংলাদেশের পক্ষে কাতর কণ্ঠে অনুনয় করতে হয়েছে যে, ছোট্ট এ দেশটির পক্ষে বিপুল জনসংখ্যা রোহিঙ্গাদের দায়ভার বইতে কষ্ট হচ্ছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার ) আয়োজিত এ ভার্চুয়াল সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতি মন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে রাজী হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আন্তরিকভাবে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করা।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের এই ভার আর বইতে পারছে না বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার ( ইউ-এন-এইচ-সি-আর) এ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ( ই ইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন রোহিঙ্গাদের এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রোহিঙ্গাদের সহায়তায় দাতা সংস্থার আঞ্চলিক সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের দেখভালের জন্যে আরো ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে।
এর মধ্যে ২০ কোটি মার্কিন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ৯ কোটি ৬০ লাখ ও যুক্তরাজ্য দিবে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগান জানান, রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয় বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আগেই বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আগামী ১০ বছর মানবিক সহায়তা দিতে একটি প্রস্তাব দিয়েছে দাতাগোষ্ঠী। তবে, এতে আগ্রহ নেই বাংলাদেশের। কারণ বাংলাদেশ চায় স্থায়ী সমাধান।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা সংকটে সমাধানে চীন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীনের প্রস্তাবে রাজি বাংলাদেশ । তবে সেখানে থাকতে হবে মিয়ানমারের নেত্রী অন সান সুচিকে।
এদিকে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক দাতাদের বৃহস্পতিবারের সম্মেলনে চীনের উপস্থিতি থাকবে এটা যেমন জানাই ছিল তেমনি ভারতের অনুপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। আর সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে সাবমেরিনসহ অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতিতেও হতাশ বাংলাদেশ।
এদিকে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোনে জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছে চীনকে।
বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করাই সংকটের সমাধান। #
পার্সটুডে/এআরকে/এমএএইচ/২৩