সরকারের কথা শুনছে না আলু-পেঁয়াজ, চালের বাজার অস্থির: কষ্টে ভোক্তারা
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i84362-সরকারের_কথা_শুনছে_না_আলু_পেঁয়াজ_চালের_বাজার_অস্থির_কষ্টে_ভোক্তারা
বাংলাদেশের বাজারের আলু-পেঁয়াজ সরকারের কথা শুনছে না। সেই যে মগডালে চড়েছে আর নামছে না। চাল, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুরই দাম বাড়ন্ত। কোনো কোনো পণ্যের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। র‍্যাব পাঠিয়ে অথবা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জরিমানা করা হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
নভেম্বর ০৩, ২০২০ ১৭:২৭ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের বাজারের আলু-পেঁয়াজ সরকারের কথা শুনছে না। সেই যে মগডালে চড়েছে আর নামছে না। চাল, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুরই দাম বাড়ন্ত। কোনো কোনো পণ্যের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। র‍্যাব পাঠিয়ে অথবা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জরিমানা করা হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

করোনাকালীন আর্থিক দুর্বিপাকে পড়ে দরিদ্র আর নিম্ন আয়ের মানুষদের নিত্যদিনের সংসারে বাজার খরচ জুটছে না। তারপর বাড়তি দামে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য কিনতে গিয়ে হয় কম জিনিস কিনতে হচ্ছে না হয় সহজ সমাধান গরিবের বাজার বন্ধ থাকছে।  

এরইমধ্যে অস্থির হয়ে উঠছে প্রধান খাদ্য- চালের বাজার। সরকার মিলগেটে প্রতিকেজি সরু মিনিকেট চাল ৫১ টাকা ৫০ পয়সা ও প্রতি ৫০ কেজির বস্তা দুই হাজার ৫৭৫ টাকা; আর মাঝারি মানের চাল প্রতিকেজি ৪৫ টাকা ও বস্তা দুই হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন মিনিকেট চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, বি-আর আটাশ চাল ৫২ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা চাল ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে নিত্যপণ্যের অযোক্তিক মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে নিয়মিত তদারকিতে বাণিজ্য, খাদ্য, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের পক্ষে নানা সংস্থা কাজ করছে। চাল, আলুর দাম নির্ধারণও করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু সরকারের নির্দেশ আমলেই নিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। বাজার তদারকিতে চলছে একের পর এক অভিযান। কিন্তু কোনো কিছুতেই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। পণ্য বিক্রি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের খেয়ালখুশিমতো। আর ঘুরেফিরে সেই পুরনো সিন্ডিকেটের কারসাজির তথ্যই উঠে আসছে সামনে।

বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতির চাহিদা-ও সরবরাহের কার্যকারণকে ত্বরান্বিত করছে অসাধু সিন্ডিকেট যাদের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক শক্তির মদদ। এটাই মনে করছেন ভোক্তাসাধারণ। তা নাহলে, দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হলেও আলু-চাল-মাছ-সবজির দাম বাড়বে কেন?

বাজার বিশ্লেষক ও বিশিষ্টজনেরা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ানো হচ্ছে তা অর্থনীতির কোনো যুক্তির মধ্যেই পড়ে না। এর মধ্যে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বিভিন্ন সময়ের অযৌক্তিক মন্তব্য বাজারকে স্থিতিশীল করার পরিবর্তে আরও অস্থির করে তুলছে। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সিপিডি’র গবেষক ড. গোলাম মোয়াজ্জম রেডিও তেহরানকে বলেন, সরকারে উচিত নিবিড়ভাবে বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে ঘাটতি মেটাতে দ্রুত আমদানির ব্যবস্থা নেয়া ।

তিনি আরও পরামর্শ দেন, সরকারের উচিত হবে বাজারে কৃষি পণ্যের ঘাটতি পুরণে উৎপাদন বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়া এবং বিশেষ করে পচনশীল পণ্যের জন্য আরও  গুদাম নির্মাণ করা ।

গোলাম রহমান

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকারের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের স্বার্থ দেখা। কিন্তু সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে না। যার মাশুল দিচ্ছেন ভোক্তাসাধারণ।

অপরদিকে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে নিবিড় তদারকির অভাব রয়েছে। সমস্যার গোড়াতে হাত দিতে হবে আগে। খুচরা বাজারে তদারকি অভিযান চালানোর আগে আড়ত, হিমাগার ও আমদানিকারকদের ধরতে হবে। এসব পর্যায়ে কী পরিমাণ পণ্য, কী দামে ছাড়া হচ্ছে তার নিবিড় তদারকি প্রয়োজন। তা হলে খুচরাতেও আপনা থেকে দাম নাগালে থাকবে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।