পত্রপত্রিকার পাতার খবর
মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকা জোগাড় করেও ছেলের লাশ পেল মা–বাবা !
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- পেঁয়াজ এখনো চড়া, বাড়ল তেল আর চিনির দামও ‘-প্রথম আলো
- এএফপির রিপোর্ট-দুই সপ্তাহে কারাগারে বিরোধী দলের ৫ সদস্যের মৃত্যু-মানবজমিন
- নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি: পিএসও-ইত্তেফাক
- বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিদিনই সাজা, কাদের বললেন বিএনপি হামলা করলেই মামলা হবে-যুগান্তর
- গণহারে পুলিশ ও প্রশাসন কর্মকর্তাদের বদলি কী বার্তা দিচ্ছে?-ডেইলি স্টার বাংলা
কোলকাতার শিরোনাম:
- ‘ভারত হিন্দু ফ্যাসিস্ট’! –অরুন্ধতী, তার বিরুদ্ধে মামলা-সংবাদ প্রতিদিন
- রায়ে অসম্মতি, জম্মু ও কাশ্মীরে দ্রুত নির্বাচনের দাবি কংগ্রেসের–গণশক্তি
- ক্ষমতায়নের অস্ত্র হারাল, সুপ্রিম রায়ে সন্তুষ্ট নয়-কাশ্মীর-আনন্দবাজার পত্রিকা
- ‘ঝুট বোলে কাউয়া কাটে’, বিজেপির ‘মিথ্যাচারের’ বিরুদ্ধে সরব মমতা-আজকাল
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. পিয়াজ কারসাজিতে পুরনো সিন্ডিকেট। এটি দৈনিক মানবজমিনের শিরোনাম। কী বলবেন আপনি?
২. যুদ্ধ ও গণহত্যার মধ্যদিয়েই কেবল নেতানিয়াহু টিকে থাকতে পারেন- কথাটি বলেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

বিএনপির ডাকে দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে আজ। ১১তম দফার এই অবরোধ কাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হবে। এ সম্পর্কে প্রথম আলোসহ প্রায় সব দৈনিকে লেখা হয়েছে, রাজধানীর গুলিস্তানে বাহন পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। যুগান্তরের খবর-বিএনপির ডাকা ৩৬ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা।

নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি: পিএসও-ইত্তেফাক
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে ১৩ দিন সেনাবাহিনী চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
রাজনীতির খবরে প্রথম আলোর শিরোনাম-‘স্বতন্ত্র কৌশলে’ অস্বস্তি বাড়ছে আওয়ামী লীগে। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ১৩০টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে দলের এক বা একাধিক শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন।
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নিলুফার আনজুম। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াত বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের স্ত্রী। কিন্তু এই আসনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাতে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের আরও ছয়জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁরা ভোট করলেও প্রত্যেকেই দলের পদধারী। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা নানা ভাগে বিভক্ত হয়ে মাঠে নেমেছেন।
ময়মনসিংহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাজিম উদ্দীন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ হাসান, উপদেষ্টা নাজনীন আলম, সদস্য মোর্শেদুজ্জামান সেলিম, সাবেক উপদেষ্টা মতিউর রহমান এবং গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের নেত্রী স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিযোগিতা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। তবে নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করবেন, সেটা হবে না।
রাজশাহীর প্রায় সব আসনেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। তবে রাজশাহী-৬ আসন ইতিমধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকে মনে করছেন, অন্তত ১৩০টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে দলের এক বা একাধিক শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে ৮০টি আসনে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
পেঁয়াজ এখনো চড়া, বাড়ল তেল আর চিনির দামও-প্রথম আলো
বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় নতুন করে নাম লিখিয়েছে সয়াবিন তেল ও চিনি। ডলার কিনতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে কারণ দেখিয়ে ভোজ্যতেল ও চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেল ও চিনির দাম বাড়িয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দুই পণ্যের দাম এমন সময় বাড়ল, যখন পেঁয়াজের দাম হঠাৎ নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শনিবার পেঁয়াজের দাম রাতারাতি কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বাড়ার পর তা আর কমেনি।
পেঁয়াজ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে গতকাল ১২২টি প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

মতামত প্রতিমন্ত্রীর লোকেরা ঘুষ নেন আবার ফেরতও দেন! প্রথম আলোর প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি সোহরাব হোসেন তার মতামত কলামে লিখেছেন, বাংলাদেশে ঘুষ নিয়ে ফেরত দেওয়ার ঘটনা খুব কম। যাঁরা ঘুষ নেন, তাঁরা ঘুষদাতার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাবান। কেন ফেরত দেবেন? কিন্তু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এতটাই দয়াবান যে, তিনি ঘুষের সাড়ে নয় লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
তবে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থার আগে তিনি আরও কিছু ‘ব্যবস্থা’ নিয়েছেন, যে কারণে ঘুষদাতাদের তিনজনের দুজন মন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে পালিয়ে সদর রাস্তার উদ্দেশে ভোঁ-দৌড় দিয়ে আত্মরক্ষা করেছেন। আরেকজন মন্ত্রীর বাড়ির প্রাচীর টপকে ডিবি অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন। ডিবি অফিসে যাওয়া ব্যক্তির নাম আবু সুফিয়ান। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদেরও নেতা। তাঁর মাধ্যমেই মন্ত্রীর বাড়ির কেচ্ছাকাহিনি জনসমক্ষে এসেছে।
প্রথম আলোর খবরে জানা যায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের কথা বলে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাতজনের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের সাড়ে ৯ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) প্রতিমন্ত্রীর এক প্রতিনিধি রাজধানীর মিন্টো রোডে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীর টাকা ফেরত দেন।
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য। তাঁর গাড়িচালক ও এক ভাগনে ওই টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও টাকা ফেরত পাননি ভুক্তভোগীরা। এ কারণে গত ১৪ মে ৪৮ জনের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন আবু সুফিয়ান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তাঁর ধারণা, প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ করার কারণেই তিনি এবার মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েছেন বিপ্লব হাসান নামে ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতা।
প্রতিমন্ত্রীর দাবি ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। একজন আইনানুগ নাগরিক ও মন্ত্রী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছিল ঘুষগ্রহণকারীকে পুলিশে সোপর্দ করা। তাঁদের নামে মামলা করা। কিন্তু সেটি না করে তিনি ঘুষের টাকা নিয়ে তাঁর প্রতিনিধিকে ডিবি কার্যালয়ে পাঠালেন কেন? তাহলে ঘুষের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা এড়াবেন কীভাবে?
আবু সুফিয়ান পালিয়ে ডিবি কার্যালয়ে গিয়েছেন বলেই হয়তো ঘুষের রহস্য ফাঁস হয়েছে। তা না হলে প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে সন্ত্রাসী ঘটনা বলে উল্টো তাদের ফাঁসিয়ে দিলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না।
ঘুষের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোয় প্রতিমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। কিন্তু এ রকম ঘুষ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি কি মন্ত্রী পদে বহাল থাকতে পারেন?
মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকাও জোগাড় করেছিলেন, কিন্তু ছেলের ক্ষতবিক্ষত লাশ পেলেন মা–বাবা-প্রথম আলো

ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক কিশোর অপহৃত হওয়ার পর তাঁর মা–বাবা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে সেখান থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে অপহরণকারীর চাহিদামতো মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকাও জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু সেই ছেলেকে আর ফিরে পাননি তাঁরা। তিন দিন পর বসুন্ধরা এলাকা থেকেই উদ্ধার করা হয় তাঁর গলাকাটা লাশ।
নিহত তৌহিদুল ইসলাম (১৯) পরিবারের সঙ্গে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর সড়কের ডি ব্লকে থাকতেন। তাঁর বাবা মোহাম্মদ নবী হোসেন জমি কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তৌহিদুল ছিলেন দ্বিতীয়। আগে মাদ্রাসায় পড়ে আসা তৌহিদুল বর্তমানে ভাটারার ডুমনি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়তেন।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে জুয়েল রানা (২৮) নামে বসুন্ধরা সিকিউরিটিজের একজন নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ২৬ নভেম্বর সকালে বসুন্ধরার ‘প’ ব্লকের একটি ছনক্ষেত থেকে তৌহিদুলের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয় বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তৌহিদুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে জুয়েল রানা ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
তবে এ মামলায় থানা পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তৌহিদুলের বাবা মোহাম্মদ নবী হোসেন। তিনি বলেন, জুয়েল রানার একার পক্ষে তৌহিদুলকে খুন করা সম্ভব নয়। এ হত্যায় একটি চক্র জড়িত। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি এর তদন্তভার ভাটারা থানা থেকে ডিবিকে (গোয়েন্দা পুলিশ) দেওয়ার জন্য ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের কাছে আবেদন করেছেন।
গণহারে পুলিশ ও প্রশাসন কর্মকর্তাদের বদলি কী বার্তা দিচ্ছে?-ডেইলি স্টার বাংলা
বিস্তারিত খবরে রেখা হয়েছে, সাম্প্রতিক কয়েকটি সংবাদ শিরোনাম: ১. দুই পুলিশ কমিশনার, ১ ডিসি, ৫ এসপিকে প্রত্যাহার ও ৩ ওসিকে বদলির নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের (দ্য ডেইলি স্টার বাংলা, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩)
২. পুলিশ কমিশনার এবং ডিসি-এসপি-ওসি বদলির নতুন নির্দেশনা ইসির (দেশ রূপান্তর, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩)
৩. ৩৩৮ থানার ওসি ও ১৫৮ জন ইউএনওকে বদলির প্রস্তাবে অনুমোদন দিল ইসি (প্রথম আলো, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩)
৪. চার শতাধিক ওসি-ইউএনও বদলে ইসির সম্মতি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩)
৫. দুই ডিআইজি এক ডিসি ৫ এসপি প্রত্যাহার (যুগান্তর, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩)
এই সংবাদ শিরোনামগুলো দেখে যে প্রশ্নটি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে সেটি হলো, নির্বাচন কমিশন কেন এভাবে গণহারে প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি ও প্রত্যাহারের অনুমোদন দিচ্ছে?
প্রশ্নটা এ কারণে যে, রাজনীতি ও ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে নেই, অতএব নির্বাচন দুইশো ভাগ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, এমনকি নির্দলীয় সরকারের অধীনে হলেও যে আওয়ামী লীগই জিতবে এবং তারাই যে আবারও সরকার গঠন করবে সেটি দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
কেননা, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী বলতে মাঠে আছে জাতীয় পার্টি, যারা মূলত আওয়ামী লীগ বলয়েরই দল।
ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে চরমোনাই পীরের ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দলের প্রার্থীদের জামানত রক্ষার মতো ভোটও পাওয়ার কথা নয়। জামায়াতের নিবন্ধন নেই, অতএব তাদের ভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। বামপন্থি দলগুলোর মধ্যে যারা ভোটের মাঠে আছে, তারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গেই আছে এবং নৌকা প্রতীকেই ভোট করছে। সুতরাং ভোট নিয়ে উন্মাদনা যতই থাকুক, এবারের ভোটও কার্যত একতরফাই হবে এবং খেলা শুরুর আগেই ফলাফল নির্ধারিত।
এটি ভালো হলো নাকি খারাপ; দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে এটির প্রয়োজন ছিল নাকি ছিল না, সেটি অন্য তর্ক।
প্রশ্ন হলো, এরকম নির্বাচনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন যে গণগারে পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি ও প্রত্যাহারের নির্দেশ দিচ্ছে, তার কারণ কী? এই পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবেন? তারা প্রভাব বিস্তার করে কী করবেন? ভোটের ফলাফল তো জানা।
তাহলে নির্বাচন কমিশন কি নিজেদের সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা করছে? বাস্তবতা হলো, প্রধান দলগুলোর অংশগ্রহণে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে ইসির সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা প্রমাণের কিছু নেই। তারা পক্ষপাতদুষ্ট থাকলেও যা হবে, নিরপেক্ষ থাকলেও তা-ই হবে।
যদিও কর্মকর্তাদের এই বদলির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বলছে, মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বদলির তালিকা দেওয়া হয়েছিল, কমিশন তা অনুমোদন করেছে। প্রসঙ্গত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পরে সরকারি কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সম্মতির প্রয়োজন হয়। তার মানে, মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী এই বদলি হচ্ছে। মন্ত্রণালয় মানে সরকারের নির্বাহী বিভাগ। অর্থাৎ সরকারের চাহিদা অনুযায়ী এই বদলি হচ্ছে।
সেখানেই ওই একই প্রশ্ন, সরকার কেন তাদেরকে বদলি করতে চায়? তারা নির্বাচনে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে? নাকি সরকার যে ধরনের নির্বাচন দেখতে চায়, সেই ধরনের নির্বাচন করার ক্ষেত্রে এই কর্মকর্তারা যোগ্য নন? এবার যে ধরনের নির্বাচন হচ্ছে, যেটি মূলত একতরফা—সেখানে এই ধরনের বদলি ও প্রত্যাহার কি খুব জরুরি? এর একটি কারণ কি এই যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে একটা উন্মাদনা তৈরির চেষ্টা করা?
যেখানে কোনো ঝুঁকি নেই, চ্যালেঞ্জ নেই, পরীক্ষা নেই, সেখানে নিরপেক্ষতা ও সততার প্রশ্ন অবান্তর।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ক্ষমতায়নের অস্ত্র হারাল, সুপ্রিম-রায়ে সন্তুষ্ট নয় কাশ্মীর-এ শিরোনামের খবরে আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, নরেন্দ্র মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ সংবিধান মেনে বৈধ পদ্ধতিতেই করেছিল বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সেই সঙ্গে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরে করতে হবে ভোট। দ্রুত ফেরাতে হবে রাজ্যের মর্যাদা। পাশাপাশি বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল আলাদা রায়ে জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরবাসী প্রজন্মের পরে প্রজন্ম যন্ত্রণা বইছেন। তাই অন্তত ১৯৮০-র দশক থেকে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র-বহির্ভূত শক্তির হাতে হওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত করতে সত্যানুসন্ধানী কমিশন গড়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরবাসীর বড় অংশের মতে, লুপ্ত অনুচ্ছেদ ছিল তাঁদের ক্ষমতায়নের অন্যতম হাতিয়ার। ফলে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তাঁরা। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সত্যানুসন্ধানী কমিশন নিয়েও বিশেষ আশাবাদী হতে পারছেন না অনেকে।
গণশক্তি পত্রিকার খবর-সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সহমত নয় কংগ্রেস।সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই অবস্থান জানান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষনেতা নেতা পি চিদাম্বরম।

‘ভারত হিন্দু ফ্যাসিস্ট’! অরুন্ধতীর বিরুদ্ধে মামলা কলকাতা হাই কোর্টে-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ভারতবর্ষ ‘হিন্দু ফ্যাসিস্ট এন্টারপ্রাইস’। এই মন্তব্যের জেরে লেখিকা অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় সবপক্ষকে নতুন করে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দিলেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মামলাকারীকে।মামলাকারী মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, অরুন্ধতী ভারতকে ‘হিন্দু ফ্যাসিস্ট এন্টারপ্রাইস’ বলে টুইটারে পোস্ট করেন। সেই মন্তব্য মুছতে হবে বলে আর্জি মামলাকারীর। ভারতের নাগরিক হিসেবে এই ধরণের মন্তব্য তাঁর কাছে দুঃখ জনক বলে দাবি মিতাদেবীর। তাঁর বক্তব্য, এ দেশে সরকার গণতন্ত্র মেনে তৈরি হয়। মানুষ ভোট দিয়ে বেছে নেন সরকারকে। ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। অভিযোগ,”লেখক শুধু পোস্ট করেই খান্ত হননি। তিনি আলজাজিরাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। যেটি লাদেনের চ্যানেল।” একইসঙ্গে অভিনেতা প্রকাশ রাজও একই কথা বলেছেন দাবি মামলকারীর।মামলকারীকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “দিল্লি হাই কোর্টে কেন জাননি? ইন্টারভিউ তো অনেক আগেই হয়েছে। অন্য কোনও কোর্টে কি মামলা হয়েছে?” সেটা জানাতে পারেননি মামলাকারী।
মুখ্যমন্ত্রী কে? রাজমাতা বেঁকে বসায় রাজস্থানে ফাঁপরে বিজেপি-সংবাদ প্রতিদিন
বিধানসভা নির্বাচনের সাতদিন পর বিজেপি (BJP) ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশে দুই মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেও রাজমাতা বেঁকে বসায় মরুরাজ্য রাজস্থানে জট অব্যাহত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূত কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী জয়পুরে গিয়েও জট কাটাতে ব্যর্থ হলেন। ফলে আরও একদিন পিছিয়ে গেল রাজস্থানের (Rajasthan) মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রকাশ।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১২