মৃত্যুদণ্ডের আইন সত্ত্বেও বাংলাদেশে ধর্ষণ বাড়ছে: বিশ্লেষক প্রতিক্রিয়া
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গত ১০ মাসে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় রাজধানীর ৫০টি থানায় মামলা হয়েছে ৫২৫টি। এর মধ্যে শিশু-কিশোরী ধর্ষণের মামলা প্রায় অর্ধেক (২৩৫টি। ভুক্তভোগীদের ৪৫ শতাংশই শিশু-কিশোরী, যাদের বয়স ৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। শিশুধর্ষণের বেশির ভাগ ঘটনায় আশপাশের মানুষেরাই দায়ী।
এ বছর জানুয়ারী থেকে অক্টোবর পর্যন্ত থানায় রুজু হওয়া মোট ৫২৫টি মামলার মধ্যে ১৮৬টি মামলার নথি পর্যালোচনা করে ঢাকার একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে আজ এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।
জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধর্ষণ মামলার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মার্চের শেষ সপ্তাহ ধেকে রাজধানীতে ধর্ষণের ঘটনা কমে আসে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দেশে সাধারণ ছুটি ছিল। ওই সময়ে (এপ্রিল ও মে মাসে) রাজধানীর ৫০ থানায় ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৩৪টি। তবে ছুটি শেষে মামলার সংখ্যা বেড়ে যায়। জুন মাসে মামলা হয়েছে ৬৪টি। আর গত অক্টোবর মাসে মামলা হয়েছে ৯৩টি।
এসব মামলার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীদের একটি বড় অংশকে প্রতারিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিয়ের আশ্বাস ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষনের শিকার হয়েছে ৬৪ শতাংশ নারী।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মাহমুদা আক্তার গনমাধ্যমকে বলেছেন, প্রেম, চাকরি ও বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের মামলা বেশি হয় ঢাকায়। ইদানিং দেখা যাচ্ছে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও করে রাখছে অপরাধীরা। ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনাও ঘটছে।
এ প্রসংগে সিলেটের দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার সম্পাদক জনাব মু্কতাবিস উন নূর রেডিও তেহরানকে বলেন, সমাজে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবের কারণে মানুষ এরকম জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অপরাধের শাস্তি বাড়িয়ে এমন ঘটনা দমন করা যাবে না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নারী ও শিশু নির্যাতনের অপরাদের শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড প্রবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও এরকম অপরাধ কমছে না।
পর্যালচনায় দেখা যাচ্ছে, উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যরা ধর্ষণের মতো অপরাধের শিকার হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মামলা-মোকদ্দমায় যেতে চায় না। গরিব মানুষ থানায় ও আদালতে মামলা করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করলেও শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে আপস করে ফেলে। অনেকের আর্থিক সামর্থ না থাকায় শেষপর্যন্ত মামলা চালাতেও পারেনা।#
পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।