বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে: হাসিনা
-
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির ভাষা সংরক্ষণে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রথমবারের মতো দেয়া হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক। পদক প্রাপ্তরা হলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিশ্বাস ত্রিপুরা।
আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ পদক দেয়া হয় উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ এবং বলিভিয়ার অনলাইন প্রতিষ্ঠান অ্যাক্টভিজমো লেংকুয়াস-কে।
আজ (রবিবার) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময়, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অংশগ্রহণের বিষয়টি অনেক জ্ঞানী-গুণী বুদ্ধিজীবী মানতে রাজি হতেন না। তারা বলার চেষ্টা করেছেন- ‘সে তো জেলে ছিল, সে আবার ভাষা আন্দোলন করবে কীভাবে?’ কিন্তু আমার প্রশ্ন—জেলে তিনি গিয়েছিলেন কেন? তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল ভাষা আন্দোলন শুরু করার কারণেই। সে কারণে তিনি বারবার গ্রেফতার হন। দীর্ঘ কারাবাস তাঁকে করতে হয়।
'সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না' মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার অবদানের কথা আমি বারবার বক্তব্যে বলেছি। যখন সবাই অস্বীকার করতো, তখন আমি এটা বেশি করেই বলতাম। আজ মনে হচ্ছে- আমার আর বলার প্রয়োজন নেই। এখন সবই জানতে পারবেন। পাকিস্তানের গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে এ সম্পর্কে অনেক বেশি জানতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রক্তের বিনিময়ে আমরা যে নিজের ভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, আজ তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। আজ কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশও এ দিবসটি পালন করছে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের অন্য ভাষা শিখতে হবে। কিন্তু সেই সঙ্গে মাতৃভাষাও শিখতে হবে।’
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বর্ণনা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘ভাষার অধিকার রক্ষা করা, ভাষাকে সম্মান দেওয়া এবং হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলোকে সংরক্ষণ করার জন্য এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলি। আমরা এই ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার কাজ শুরু করি। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এর কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে আবারও ক্ষমতায় এসে শুরু করি। এর কাজ আমরা অব্যাহত রেখেছি। আমাদের লক্ষ্য হলো সারা বিশ্বের হারিয়ে যাওয়া এবং চলমান ভাষাগুলোর নমুনা এখানে সংরক্ষণ করা। গবেষণা করা, ভাষার ইতিহাস সংরক্ষণ করা। এ জন্য ভাষা জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে। কোনও ভাষা যাতে হারিয়ে না যায়, তার জন্য এই ব্যবস্থাটা আমরা নিয়েছি।’
ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে ক্যাটাগরি-২ ইনস্টিটিউটের স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী এ সময় ধন্যবাদ জানান।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।