লকডাউন এখনই শিথিল নয়: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; লকডাউন কোনও সমাধান নয়: জাতীয় পার্টি
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i95250-লকডাউন_এখনই_শিথিল_নয়_স্বাস্থ্য_অধিদপ্তর_লকডাউন_কোনও_সমাধান_নয়_জাতীয়_পার্টি
করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে সিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে রোগী। রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। ঈদের পর থেকেই হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ সংকট দেখা দেয়। গত তিন দিনে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ৩০, ২০২১ ১৮:৪৩ Asia/Dhaka

করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে সিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে রোগী। রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। ঈদের পর থেকেই হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ সংকট দেখা দেয়। গত তিন দিনে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে প্রতিদিন বাইরের জেলা  থেকে  দুই শতাধিক রোগী রাজধানীতে আসছেন আইসিইউয়ের জন্য। রোগীদের আইসিইউয়ের জন্য দীর্ঘ সিরিয়াল নিয়ে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কোনো রোগী সুস্থ হলে কিংবা মারা গেলেই কেবল বেড খালি হয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সামনে ‘সিট খালি’ নেই জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি টানাতে বাধ্য হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা জানান, অপেক্ষমাণ রোগীদের চাপ অনেক বেশি। বাইরের জেলা থেকে জরুরি রোগী আসছে প্রচুর। শয্যা খালি না থাকায় বেশিরভাগ রোগীকেই ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

এই অবস্থায় বাইরের জেলা থেকে রোগীরা রাজধানীতে এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে  আবার ফিরে যাচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলেন, যেসব রোগী ভর্তি হতে না পেরে ফেরত যাচ্ছেন তাদের ভাগ্যে কী হচ্ছে জানি না। তাদের অনেকে রাস্তায় কিংবা বাসায় গিয়ে মারা যাচ্ছেন।
বাংলাদশের করোনা পরিস্থিতির এমন ভয়াবহতায় এবার আর্তনাদ শুরু করেছে খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর । 

আজ শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা এ বি এম খুরশীদ বলেন, যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, আমরা কিভাবে এই সংক্রমণ সামাল দেব? রোগীদের জায়গা দেব কোথায়? 

তিনি বলেন, সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। অবস্থা খুবই খারাপ হতে পারে। এমন ভয়ংকর পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। 

দেশে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চলমান লকডাউন আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সংস্থার মহাপরিচালক খুরশীদ আলম জানান, আরও আগেই কেবিনেট মিটিংয়ে বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। 

তবে, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, ‘আমাদের দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোনও সমাধান নয়। করোনার গণটিকা কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে হবে। পাশাপাশি সংক্রমণ প্রবণ এলাকায় করোনা চিকিৎসায় ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকমী নিয়োগ দিতে হবে।’

শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জিএম কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশের বাস্তবতায় লকডাউন সফল হবে না। লকডাউন চলছে, কিন্তু মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বেশির ভাগ দরিদ্র্য মানুষের ঘরে খাবার নেই, পকেটে ওষুধ ও শিশুখাদ্য কেনার পয়সা নেই। এ ধরনের মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সর্বশেষ দফায় ২৮ জুন লকডাউন শুরু হয়। ৫ জুলাই পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী লকডাউন চলে। এরপর ৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ১৪ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত লকডাউনের বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়ানো হয়। এরপর ঈদুল আজহার কারণ দেখিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ এক সপ্তাহের জন্য শিথিল করা হয়।

এরপর তৃতীয় ধাপে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ফের শুরু হয় লকডাউন। ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন বহাল থাকার  ঘোষণা রয়েছ। #

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/রেজওয়ান হোসেন/৩০