এস আলম গ্রুপের ব্যাংকে জমা ২৬ হাজার কোটি
https://parstoday.ir/bn/news/event-i141468-এস_আলম_গ্রুপের_ব্যাংকে_জমা_২৬_হাজার_কোটি
বাংলাদেশের বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম, তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে কেবল ছয়টি ব্যাংকেই ২৬ হাজার কোটি টাকার সন্ধান মিলেছে। এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ভাই আবদুল্লাহ হাসানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এই টাকা ব্যাংকগুলোতে জমা আছে। এসব ব্যাংকের পাঁচটিই এস আলম গ্রুপের সরাসরি মালিকানায় অথবা নিয়ন্ত্রণে ছিল।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪ ১৪:১৬ Asia/Dhaka
  • এস আলম গ্রুপের ব্যাংকে জমা ২৬ হাজার কোটি

বাংলাদেশের বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম, তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে কেবল ছয়টি ব্যাংকেই ২৬ হাজার কোটি টাকার সন্ধান মিলেছে। এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ভাই আবদুল্লাহ হাসানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এই টাকা ব্যাংকগুলোতে জমা আছে। এসব ব্যাংকের পাঁচটিই এস আলম গ্রুপের সরাসরি মালিকানায় অথবা নিয়ন্ত্রণে ছিল।

দেশটির জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর অঞ্চল-১৫–এর এক অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে এস আলম গ্রুপের এ বিপুল অর্থের সন্ধান মিলেছে। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, ওই কর অঞ্চলের কর্মকর্তারা ব্যাংকে জমা পুরো অর্থ কর বিভাগের আয়ত্তে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই কর অঞ্চল-১৫ এস আলম পরিবারের সদস্য ও তাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল। সাধারণত ফাঁকি দেওয়া কর আদায় করার লক্ষ্যে হিসাব তলব করে থাকে কর বিভাগ।

কর অঞ্চল-১৫–এর তদন্ত দল সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে ছয়টি ব্যাংকে থাকা এস আলম গ্রুপের মালিকপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন হিসাবে প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা ঢুকেছে (ডিপোজিট হয়েছে) বলে অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে। এর বেশির ভাগই ঋণের অর্থ হিসেবে জমা হয়েছে। এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালের পর থেকে শুধু এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের একাধিক হিসাবেই ঢুকেছে ৮৩ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা।

যে ছয়টি ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের বিপুল অঙ্কের টাকার সন্ধান মিলেছে, সেগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ও আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি চারটি ব্যাংকই সরাসরি এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল। এ ছাড়া আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকও ছিল এই গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। ছয়টি ব্যাংকের পর্ষদই বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যান। ওই সরকারের আমলে যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা পেয়েছে, তাদের অন্যতম ছিল এস আলম গ্রুপ। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ও রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয়ে এস আলম ও তাঁর পরিবার গত এক দশকে ব্যাংক দখলসহ নানা ধরনের আর্থিক অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে নামে–বেনামে অর্থ বের করে তা পাচার করা হয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

এস আলম গ্রুপের ২ লাখ কোটি  টাকার ঋণ

২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম। ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা এস আলম গ্রুপ একাই বের করে নিয়েছে বলে ব্যাংকটির নতুন পর্ষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এই গ্রুপ সব মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে ঋণের অর্থে সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবার সিঙ্গাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

১৮টি কোম্পানির ভ্যাট ফাঁকির তদন্ত

আয়করের পাশাপাশি এস আলম গোষ্ঠীর ১৮টি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকির তদন্ত করছে চট্টগ্রামের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। চলতি মাসেই তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন দেবে গঠিত নিরীক্ষা দল। #

পার্সটুডে/জিএআর/৯