সরকার পতনের সাম্প্রতিক আন্দোলনটি ছিল সব মানুষের: ঢাবি শিবির নেতা ফরহাদ
(last modified Thu, 26 Sep 2024 14:50:23 GMT )
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪ ২০:৫০ Asia/Dhaka
  • এস এম ফরহাদ
    এস এম ফরহাদ

কোটা সংস্কারের দাবি থেকে সরকার পতনের সাম্প্রতিক আন্দোলনটি সব মানুষের আন্দোলন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জেনারেল এস এম ফরহাদ।

রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশের পর আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই মন্তব্য করেন।  

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৯ দফার সম্পৃক্ততার বিষয়ে ফরহাদ বলেন, "এই আন্দোলন সব মানুষের ছিল। বিভিন্ন নেতাকর্মী নিজেদের দলের পরিচয় ভুলে গিয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী এখানে শামিল হয়েছেন। ছাত্রশিবিরও তার রিসোর্স নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। কোনটা কার পরিকল্পনা, কীভাবে তা বাস্তবায়ন হয়েছে, এসব কৃতিত্ব নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। এখানে ছাত্রদল, বাম ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে। ফ্যাসিবাদ কায়েমে ছাত্রলীগ যে ধরনের ঘৃণ্য কাজ করেছে, তার প্রতিটির বিচার হওয়া দরকার। শিক্ষার্থীরা সবাই আইনি পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা মনে করি। কেউ যদি আইনি সহায়তা চায়, আমরা ছাত্রশিবির থেকে তা দেবো।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদে ১৯৯০ সালে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ক্যাম্পাসে রাজনীতি না করতে দেওয়ার বিষয়ে সব ছাত্রসংগঠনের মধ্যে মতৈক্য হয়েছিল। এ বিষয়ে শিবির নেতা ফরহাদ বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনো বিষয়ে হ্যাঁ বা না বলার অধিকার কেবল সিন্ডিকেট, সিনেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের রয়েছে। সেখানে পরিবেশ পরিষদ কারও বিষয়ে একমত হলে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।"

ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে ফরহাদ বলেন, "ছাত্রলীগের কমিটির কিছু প্রক্রিয়া আছে। আমি কখনো সেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করিনি। কখনো সিভি জমা দিইনি। তবুও কেন আমাকে পদ দিল, সে প্রশ্ন ছাত্রলীগকে করা উচিত। বিতর্ক সংসদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আমার ছবি দেখা গেছে। আমি কেবল আয়োজক হিসেবে ছিলাম।"

এক প্রশ্নের জবাবে শিবিরের এই নেতা বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নামে রগ কাটার যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে কোনো নথি (তথ্যপ্রমাণ) নেই। বরং গুগলে সার্চ করলে রগ কাটার সব অপরাধ ছাত্রলীগের নামে পাওয়া যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে এস এম ফরহাদ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় কিছু প্রধান বাধা মনে করে। তারা সবচেয়ে শক্তিশালী বাধা মনে করে ছাত্রশিবিরকে। এমনও হয়েছে যে কেউ নামাজ পড়ছে, এমন অবস্থায় তুলে নিয়েও বলেছে অস্ত্রসহ আটক

ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের বিষয়ে একটা ভীতি তৈরি করেছিল। তবে আমাদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের (তিনি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম) আত্মপ্রকাশের পর তা একেবারেই ভেঙে গেছে। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই ছিলাম।

এস এম ফরহাদ আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মনে রাজনীতি নিয়ে এখন যে চিন্তা আছে, এটা গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী বয়ানেরই ফলাফল। তারা দেখেছে, ছাত্ররাজনীতি মানে নেতাকে প্রটোকল দেওয়া, হলে আসন বণ্টন করা, ভিন্নমতকে নির্যাতন করা এবং কারও কথা বলতে না পারা। কিন্তু আমূল সংস্কারের পর এসব পরিবেশ পরিবর্তন হলে শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতিকে গ্রহণ করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা ফরহাদ সম্প্রতি নিজের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।#

পার্সটুডে/এমএআর/২৬

ট্যাগ