পুলিশের ২৫২ এসআইকে অব্যাহতির কারণ জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশের রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫০ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ক্যাডেটকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল (সোমবার) একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আদেশ দেওয়া হয়। গতকাল স্থানীয় থানাগুলোতে ডেকে তাঁদের হাতে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, প্রশিক্ষণ শেষের আগেই এসআই অব্যাহতির পেছনে রাজনৈতিক কোনো কারণ নেই। অতীতে এর চেয়েও বেশি পরিমাণ অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়টি সারদা পুলিশ একাডেমি বলতে পারবে। অনেক ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গ হতে পারে। এটা কোনো বিষয় না। নতুন সার্কুলার দেয়া হয়েছে দ্রুত নিয়োগ হবে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো আন্দোলনে উসকানিদাতাদের রাজনৈতিক পরিচয় অনুসন্ধান করতে হবে। জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যেন আর অপরাধে জড়াতে না পারে সতর্ক থাকতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
এর আগে ২০ অক্টোবর চারঘাটে পুলিশ একাডেমিতে ৬২ জন সহকারী পুলিশ সুপারের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ জন্য রাজশাহীতেও এসেছিলেন। তখন তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অনিবার্য কারণে এই কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে।
অব্যাহতি পাওয়া কয়েকজন উপপরিদর্শক জানান, ওই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আগে ৪০তম ক্যাডেট এসআই-২০২৩ ব্যাচের উপপরিদর্শকদের একাংশকে ১৯–২৩ অক্টোবর ছুটিতে পাঠানো হয়। আগের দিন ১৮ অক্টোবর এই ছুটি ঘোষণা করা হয়। ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টায় তাঁদের একাডেমিতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এর আগেই স্থানীয় থানাগুলোয় তাঁদের ২৫২ জনের বরখাস্তের আদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আবার ছুটি পাওয়া প্রশিক্ষণার্থীদের একাংশ যথারীতি যোগদান করেছেন।
এ সম্পর্কে পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমান ভুঞা বলেন, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে প্রশিক্ষণরত ২৫২ জন উপপরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে পর্যায়ক্রমে ‘ডিসচার্জ’ করা হচ্ছে। এটার প্রসেস চলছে। চিঠি ইস্যু হচ্ছে।’
সারদায় থাকা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে পুলিশে এসআই পদে চাকরির জন্য প্রার্থীকে মৌলিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়। তবে এর আগে শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। পরীক্ষা দিতে হয় কম্পিউটার পরিচালনায়ও। আর পর্যায়ক্রমে সব ধাপ শেষ হলে প্রার্থীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। এরপর চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীকেই কেবল ‘আউটসাইড ক্যাডেট’ হিসেবে সারদায় এক বছরের জন্য মৌলিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এবার আউটসাইড ক্যাডেট ব্যাচে মোট ৭০৪ জন ছিলেন। সাধারণতঃ প্রতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে আউটসাইড ক্যাডেট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
পূর্ণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পুলিশ একাডেমিতে পাসিং আউটের আনুষ্ঠানিকতার পর এখানে মৌলিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শকদের (এসআই) বিভিন্ন ইউনিটে মাঠপর্যায়ে কাজের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে এক বছর শিক্ষানবিশকাল পূর্ণ হলে তাদের পুলিশের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২২