ভারত থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতি, ভালোভাবে দেখছে না অন্তর্বর্তী সরকার
ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া রাজনৈতিক বিবৃতি অন্তর্বর্তী সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান।
আজ (বৃহস্পতিবার) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিকবার বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার ও ভারত সরকারকে বিষয়টি জানিয়েছে। তাদেরকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর সেখানকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে যে রাজনৈতিক বিবৃতি ও বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটি বাংলাদেশ সরকার ভালোভাবে দেখছে না।” এ ব্যাপারে তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তৌফিক হাসান বলেন, "আমাদের দুই দেশের মধ্যে যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এটির জন্য আসলে এ ধরনের বক্তব্য থেকে তাকে বিরত রাখাটা খুবই জরুরি।"
শেখ হাসিনাকে বিবৃতি প্রদানে বিরত থাকার বিষয়ে দিল্লির বক্তব্য জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছি। এটা তার সরকারের কাছে বলবেন। আমরা আসলে অফিশিয়ালি কোনো রেসপন্স (সাড়া) পাইনি। তারা বিষয়টি দেখবেন—এ রকম জানিয়েছেন।"
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ জানতে চাইলে তৌফিক হাসান জানান, "আসলে এই বিষয়টা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানে যদি কনসার্ন মিনিস্ট্রি বা অফিস থেকে আমাদের জানানো হয়…আমাদের কিন্তু অফিশিয়ালি সেভাবে জানানো হয়নি। সে রকম যদি আমরা নির্দেশনা পাই আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব।"
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ভারতে কতজন বাংলাদেশি পালিয়ে গেছেন আর তাদের সংখ্যা সরকার জানে কিনা—এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, সত্যিকার অর্থে এ ধরনের কোনো পরিসংখ্যান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।
জুলাই-আগস্টে আহত শিক্ষার্থীদের ভারতে চিকিৎসার বিষয়ে কোনো আলোচনা আছে কিনা—জানতে চাইলে তৌফিক হাসান বলেন, "এটি আমাদের জানা নেই। চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে কেউ অনুরোধ করেছেন—এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। কেউ অনুরোধ করেছে কিনা জানা থাকলে হয়তো আমরা চেষ্টা করে দেখতে পারি।" এ ব্যাপারে সরকার কোনো অনুরোধ করেনি বলেও জানান মুখপাত্র।
কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে ৫ আগস্ট গণভবন থেকে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। ভারত থেকে বাংলাদেশ ও বিদেশে অবস্থান করা নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার কয়েকটি ফোনালাপ প্রকাশ হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৪