ভিন্ন দেশে মার্কিন জীবাণু গবেষণা; বাড়ছে উদ্বেগ
(last modified Sat, 28 Dec 2024 11:08:43 GMT )
ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪ ১৭:০৮ Asia/Dhaka
  • ভিন্ন দেশে মার্কিন জীবাণু গবেষণা; বাড়ছে উদ্বেগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি আফ্রিকা মহাদেশে জৈব গবেষণাগার নির্মাণ ও পরিচালনায় বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। এসব গবেষণাগারের কার্যক্রম চিকিৎসা গবেষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এগুলো সম্পূর্ণ সামরিক প্রকৃতির।

 রাশিয়ার আশেপাশের দেশগুলোতে জৈবিক গবেষণা কার্যক্রমকে চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে আমেরিকা নতুন প্রজন্মের জীবাণু অস্ত্র তৈরি এবং সেগুলো মোকাবেলা করার জন্য ওষুধ  প্রস্তুত রেখে পাশ্চাত্য ও তাদের ওষুধ কোম্পানিগুলোর উপর নির্ভরতা বাড়াতে চাইছে।

রাশিয়ার সীমানার কাছে পেন্টাগন এই ধরনের পরীক্ষাগার নির্মানের মাধ্যমে ওয়াশিংটন বহু সুবিধা নিচ্ছে।

প্রথমত, আমেরিকা কোনো ধরনের ঝুঁকির মধ্যে যেতে চায়না। রাশিয়ার সীমানার কাছে এই ধরনের পরীক্ষাগার নির্মানের মাধ্যমে ওয়াশিংটন অনেক সুবিধা অর্জন করতে চায়। আমেরিকা কোনো ধরনের ঝুঁকির মধ্যে যেতে চায়না।

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের ঝুঁকিতে না ফেলে দেশের সীমানার বাইরে তার জৈবিক গবেষণা পরিচালনা করার সুযোগ খুঁজে পাচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোকে পাশ কাটিয়ে তার অশুভ লক্ষ্য হাসিল করতে সক্ষম হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে আমেরিকা ১৯৭২ সালের জৈবিক অস্ত্রের উত্পাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ কনভেনশনকে গুরুত্ব দেয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজ ভূখণ্ডের বাইরে জীবাণু অস্ত্রের উৎপাদন নিষিদ্ধ করার জন্য রাশিয়ার আহ্বানকে উপেক্ষা করছে এবং এর সংক্রান্ত কোনো চুক্তি সই করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।

তৃতীয়ত, যে এলাকায় এ ধরনের গবেষণাগার স্থাপন করা হয়, সেখানে পরিবেশের জন্য উপকারী অণুজীব ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং ওই অঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও ইকো সিস্টেমের অপূরণীয় ক্ষতি হয়।

চতুর্থত, এই ধরনের গবেষণাগার স্থাপন করে ১৯৭২ সালের কনভেনশনকে এড়িয়ে নিষিদ্ধ জীবাণুর পরীক্ষা চালাতে পারছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ককেশাস এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে  সংক্রামক রোগের বিস্তারের কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এই অঞ্চলের দেশগুলোতে মার্কিন জৈবিক গবেষণাগার স্থাপনের কারণে এই সংক্রামক রোগগুলো ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে, রুশ সরকারের সিনিয়র সামরিক কমকর্তা এলেক্সি রেতিশচেভ জানিয়েছেন, আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক-জৈবিক উপস্থিতি দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে।  

রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর জৈবিক, রাসায়নিক এবং তেজস্ক্রিয় বিকিরণ মোকাবেলা বিষয়ক বিভাগের উপ-পরিচালক এলেক্সি রেতিশচেভ মঙ্গলবার বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে আফ্রিকার ১৮টি দেশে এমন এক প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে যা  চিকিৎসায় প্যাথোজেনিক এজেন্টদের সংক্রমণ এবং প্রতিরোধের বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যালোচনা করতে পারে।

রুশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা সংস্থাগুলো এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর জৈবিক, রাসায়নিক এবং তেজস্ক্রিয় বিকিরণ মোকাবেলা বিষয়ক বিভাগের উপ-পরিচালক আরও বলেছেন, আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে জিবুতি, ঘানা এবং নাইজেরিয়ায় মার্কিন সামরিক চিকিৎসা গবেষণা ইউনিট রয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, আমেরিকা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন যেসব রোগের প্রতি আগ্রহী সেগুলো এখন বিশ্বে মহামারী হয়ে উঠছে এবং আমেরিকার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো এ অবস্থা থেকে মুনাফা করছে।  

এ বছরের শুরুতে রুশ সেনাবাহিনীর পারমাণবিক, জৈবিক এবং রাসায়নিক প্রতিরক্ষা ইউনিটের কমান্ডার ইগোর কিরিলোফ বলেছিলেন, আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক-জৈবিক উপস্থিতি দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই মর্মে তাদের কাছে অনেক নথিপত্র রয়েছে। সম্প্রতি এই কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে।

আমেরিকার এসব তৎপরতা গোটা বিশ্বের জন্যই বিপজ্জনক। করোনা মহামারির সময়ও আমেরিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। তখন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ দাবি করেছিলেন, মার্কিন অর্থায়নে ইউক্রেনে নির্মিত জৈব গবেষণাগারে বাদুড়ের শরীর থেকে করোনাভাইরাসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছিল। #

পার্সটুডে/এসএ/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।