টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্তের দাবি করলেন ব্রিটেনের বিরোধীদলীয় নেতা
-
টিউলিপ সিদ্দিক ও কেমি ব্যাডেনোচ
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশের পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি এবং ব্রিটেনের লেবার পার্টির অর্থ ও নগরবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার দাবি করেছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ।
আজ (রোববার) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের প্রতি এই আহ্বান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে লিখেছেন তিনি লিখেছেন, ‘কেয়ার স্টারমার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে। ’
কেমি ব্যাডেনোচ আরও লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।’
ব্যাডেনোচ বলেন, 'সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার (সাবেক) সরকারের সাথে তার (টিউলিপের) যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে’।

সম্প্রতি কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ব্রিটেনের বিরোধী দলটি বলেছেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি (টিউলিপ) যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন। যদি তিনি তা না করেন তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না। ’
সম্প্রতি লন্ডনে সাত লাখ ইউরোর এক ফ্ল্যাট উপহার পাওয়া নিয়ে মিথ্যাচার সামনে আসায় টিউলিপের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়।
দ্য মেইল অন সানডে এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিউলিপ দুই বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট তার খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে পান। লেবার পার্টির একাধিক সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি নিশ্চিত হয়েছে যে, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার ফ্ল্যাটটি টিউলিপ সিদ্দিককে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ী আব্দুল মোতালিফ। এরপর পর থেকে কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা দাবি করছেন, টিউলিপ যদি তার কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা না দেন, তবে তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
এদিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ও তার পরিবারের আরও চার সদস্য বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরো আত্মসাৎ করেছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছায়ামন্ত্রী ম্যাট ভাইকার্স বলেন, সরকারের যেকোনো সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য। তবে এটি আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয় যখন তিনি স্টারমারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী।
টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। #
পার্সটুডে/এমএআর/১২