একুশে পদক ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠান
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমরা এখন বেশি শক্তিশালী: ড. ইউনূস
-
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, "আমরা এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী, উদ্যমী ও সৃজনশীল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন অতীতের যেকোনো প্রজন্মের স্বপ্নের চেয়ে দুঃসাহসী।"
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের তরুণরা নতুন পৃথিবী সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দিতে চায় উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "আমাদের তরুণরা যেমন নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চায়, তেমনি একই আত্মবিশ্বাসে নতুন পৃথিবীর সৃষ্টি করতে চায়। নতুন পৃথিবী সৃষ্টিতে তারা নেতৃত্ব দিতে চায়। সেই নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তারা প্রস্তুত।"
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "তরুণরা ঘুণে ধরা, আত্মবিনাশী সভ্যতার বন্ধনমুক্ত হয়ে তাদের স্বপ্নের নতুন সভ্যতা গড়তে চায়। যে সভ্যতার মূল লক্ষ্য থাকবে পৃথিবীর সকল সম্পদের ওপর প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন দেখার এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সকল সুযোগ নিশ্চিত করা, মানুষের জীবনযাত্রাকে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে করে পৃথিবীর অস্তিত্ব কোনোরকমে বিঘ্নিত না-হয় এবং পৃথিবীর ওপর বসবাসরত সকল প্রাণীর সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকা কোনোক্রমেই বিঘ্নিত না-হয়।"
একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের অবিনাশী স্মারক উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, "দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবারের অমর একুশে নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আমরা জানি, আমাদের স্বাধিকার চেতনার প্রাণপ্রবাহ একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারি মাসেই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের চাপিয়ে দেয়া অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়েছিল ছাত্রসমাজ। ঢাকার রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।"

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ উদযাপনের স্মরণীয় দিনে তরুণদের স্বপ্নের আশু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক কামনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৮ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে ‘একুশে পদক-২০২৫’ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ বছর পদক পেলেন- চলচ্চিত্রে আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সংগীতে ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) ও ফেরদৌস আরা, গবেষণায় মঈদুল হাসান, শিক্ষায় ড. নিয়াজ জামান, আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুন ও চিত্রকলায় রোকেয়া সুলতানা, সাংবাদিকতায় মাহফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেহদী হাসান খান (দলনেতা), রিফাত নবী (দলগত), মো. তানবিন ইসলাম সিয়াম (দলগত) ও শাবাব মুস্তাফা (দলগত)। এ ছাড়া সমাজসেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর), সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে মাহমুদুর রহমান, ভাষা ও সাহিত্যে হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর) ও শহীদুল জহির (মো. শহিদুল হক) (মরণোত্তর), সংস্কৃতি ও শিক্ষায় ড. শহিদুল আলম এবং ক্রীড়ায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।#
পার্সটুডে/এমএআর/২০