গত ১৫ বছরে ঋণের নামে লুট হয়েছে পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা
https://parstoday.ir/bn/news/event-i149398-গত_১৫_বছরে_ঋণের_নামে_লুট_হয়েছে_পৌনে_২_লাখ_কোটি_টাকা
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকার মূলধন খেয়ে ফেলেছে লুটেরারা। ২০ ব্যাংক থেকে এই টাকা লুট হয়। ব্যাংক দখল ছাড়াও এরা ঋণের নামে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতি নেওয়ার প্রমাণ উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মে ২১, ২০২৫ ১০:২৯ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন
    বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকার মূলধন খেয়ে ফেলেছে লুটেরারা। ২০ ব্যাংক থেকে এই টাকা লুট হয়। ব্যাংক দখল ছাড়াও এরা ঋণের নামে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতি নেওয়ার প্রমাণ উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন।

২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দেশের ২০টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। যা আগের প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ছিল ৫৩ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে ব্যাংকগুলোতে মূলধন ঘাটতি বেড়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা।

তবে কিছু ব্যাংকে উদ্বৃত্ত থাকায় সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতে মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকায়। যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ১০ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৩৯ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে। ফলে অনেক ব্যাংক তাদের মুনাফা থেকে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে, যা তাদের মূলধন ঘাটতিকে আরও তীব্র করেছে। বর্তমানে যেসব ব্যাংকের নতুন করে মূলধন ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে এ লোকসান বহন করছিল। তবে আগের সরকার দ্বারা তারা সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়ায় এসব তথ্য গোপন ছিল। এখন সেগুলো প্রকাশ পাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এক লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ফলে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ অবলোপন বেড়েছে ৯ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন লাখ ৪৫ হাজার ১২২ কোটি টাকা পুনঃতফশিল করেছে ব্যাংকগুলো। এসব কারণে বড় অঙ্কের মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো।

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, দেশের আর্থিক খাতে গত ১৫ বছরে পতিত সরকার যে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল, তা অকল্পনীয়। এরই প্রভাবে প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। বর্তমানে ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি ব্যাংক ভালো নেই। লুটপাটের কারণে কয়েকটি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে ব্যাংকগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পর্যন্ত নিয়মিত দিতে পারছে না। অনেক ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।#

পার্সটুডে/জিএআর/২১