ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তার স্বীকারোক্তি
'১২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের ৫ সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানে ইরান'
-
১৫ জুন ইসরাইলের বাত ইয়ামে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ক্ষতিগ্রস্ত ভবন দেখা যাচ্ছে। (ছবি: এএফপি)
একজন ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অধিকৃত ভূখণ্ডের কয়েকটি ইসরাইলি সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থানগুলোতে আঘাত হানার কথা স্বীকার করল তেল আবিব।
গতকাল (মঙ্গলবার) ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর কাছে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, 'খুবই অল্প সংখ্যক' সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেননি কোন কোন স্থান আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কেমন ছিল।
তিনি আরও দাবি করেন, এসব সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো কার্যক্ষম রয়েছে।
এর আগে শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'দ্য টেলিগ্রাফ' জানায়, ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের অন্তত পাঁচটি সামরিক স্থাপনায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক স্যাটেলাইট রাডার তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন এই তথ্যগুলো দ্য টেলিগ্রাফ-কে জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ পত্রিকাটি আরও জানায়, ছয়টি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র অধিকৃত অঞ্চলের উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে। এর মধ্যে একটি ছিল গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্র এবং অন্যটি একটি রসদঘাঁটি। এই পাঁচটি এলাকার বাইরে আরও ৩৬টি স্থানে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বিভিন্ন আবাসিক ও শিল্পাঞ্চলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
এই হামলাগুলো ইসরাইলি সেনাবাহিনী আগে গোপন রেখেছিল কঠোর সেন্সরশিপ নীতির কারণে।
রবিবার, ইসরাইলি পার্লামেন্ট সদস্যরা ধ্বংসপ্রাপ্ত ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সাইন্স'র ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন করেন, যা দখলকৃত অঞ্চলে ইরানের প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি ছিল ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিশোধমূলক হামলার অন্যতম কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু, যা ১২ দিনের ইসরাইলি আগ্রাসনের জবাবে পরিচালিত হয়।
১৩ জুন, ইসরাইল বেআইনি আগ্রাসন শুরু করে ইরানের অভ্যন্তরে, যাতে বহু জ্যেষ্ঠ কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
এর জবাবে ইরান ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডজনখানেক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের মাধ্যমে পাল্টা হামলা চালায় এবং অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩ নামের প্রতিশোধমূলক অভিযান শুরু করে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে গত ২৪ জুন ইসরাইলি সরকার যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। #
পার্সটুডে/এমএআর/৯