২৫ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি করল ইরান-রাশিয়া
-
মস্কোতে ইরান হরমুজ কোম্পানির প্রতিনিধি নাসের মনসুর শরিফলু (ডানে) এবং রোসাটমের আরইপি কোম্পানির প্রতিনিধি দিমিত্রি শিগানভ (ডানে)
ইরান ও রাশিয়া চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এটি তেহরান-মস্কোর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের অংশ, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ককে সুসংহত করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।
আজ (শুক্রবার) মস্কোতে ইরান হরমুজ কোম্পানি ও রাশিয়ার রোসাটম প্রজেক্ট কোম্পানির মধ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হরমুজগান প্রদেশের সেরিক উপকূলীয় শহরে তৃতীয় প্রজন্মের চারটি উন্নতমানের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও প্রতিষ্ঠা করা হবে।
হরমুজ কোম্পানির পক্ষে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (এইওআই)-এর প্রতিনিধিত্বকারী নাসের মানসুর শারিফলু এবং রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আরইপি কোম্পানির পক্ষ থেকে দিমিত্রি শিগানভ এই ২৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় রাশিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জলালি উপস্থিত ছিলেন।
এই বিশাল প্রকল্পটি হরমুজগান প্রদেশের সেরিক অঞ্চলের কুহেস্তাক জেলায় ৫০০ হেক্টর জমির ওপর বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে মোট ৫,০২০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও রুশ ফেডারেশনের মধ্যে যৌথ সহযোগিতা উন্নয়নের জন্য এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থান নির্বাচনের কাজ শেষ হয়েছে এবং প্রকৌশল ও পরিবেশগত সমীক্ষার পাশাপাশি স্থান প্রস্তুতির একটি অংশ সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো এখন চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
একটি আন্তঃসরকারি চুক্তির আওতায় রাশিয়া ইরানে মোট আটটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ, যার মধ্যে চারটি বুশেহরে হবে।
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা'র প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি সম্প্রতি মস্কোয় রোসাটমের প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্সি লিখাচেভের সঙ্গে বৈঠকের পর এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘোষণা করেন। তিনি তেহরান-মস্কোর পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নে কৌশলগত সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ইসলামি বলেন, “পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি পর্যালোচনা ও শক্তিশালী করা প্রয়োজন ছিল। পাশাপাশি সংস্থার ২০ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনার আলোকে নতুন পদক্ষেপ নেওয়াও জরুরি ছিল।”
তিনি আরও জানান, ইরানের পরিকল্পনা হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে ২০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। বর্তমানে রাশিয়ার সহায়তায় বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউনিট নির্মাণাধীন রয়েছে।
ইসলামি জোর দিয়ে বলেন, প্রকল্পটি তেহরান ও মস্কোর জন্য অগ্রাধিকারমূলক। দুই দেশের প্রেসিডেন্টদের গুরুত্বারোপে- এর অগ্রগতি দ্রুত হয়েছে এবং চলমান আলোচনা এই যৌথ প্রচেষ্টাকে আরও সহজতর ও এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৬