বিচারকদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ‘ন্যায়বিচারের ওপর প্রকাশ্য আঘাত’: আইসিসি
https://parstoday.ir/bn/news/event-i155242-বিচারকদের_বিরুদ্ধে_মার্কিন_নিষেধাজ্ঞা_ন্যায়বিচারের_ওপর_প্রকাশ্য_আঘাত’_আইসিসি
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তাদের দুই বিচারকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
(last modified 2025-12-20T08:12:50+00:00 )
ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫ ১৪:২৮ Asia/Dhaka
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি
    আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তাদের দুই বিচারকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার আইসিসি জানায়, জর্জিয়ার বিচারক গোচা লর্ডকিপানিদজে এবং মঙ্গোলিয়ার বিচারক এরদেনেবালসুরেন দামদিন-এর বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ একটি নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার ওপর প্রকাশ্য আঘাত।

এক বিবৃতিতে আইসিসি বলেছে, “এই নিষেধাজ্ঞাগুলো বিভিন্ন অঞ্চলের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর দেওয়া ম্যান্ডেট অনুসারে কাজ করা একটি নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আক্রমণ।”

আইসিসি সতর্ক করে বলেছে, "আইন প্রয়োগের কারণে বিচারকদের হুমকি দেওয়া পুরো আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোকেই ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এ ধরনের পদক্ষেপ আইনের শাসনকে দুর্বল করে।" আদালতটি তারা তাদের কর্মীদের ও নৃশংসতার শিকার ব্যক্তিদের পাশে রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন, যিনি বিচারকদের 'ইসরায়েলের অবৈধ লক্ষ্যবস্তু করার' সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন।

বিবৃতিতে রুবিও বলেন, “এই ব্যক্তিরা ইসরায়েলের সম্মতি ছাড়াই ইসরায়েলি নাগরিকদের তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক বা বিচারের উদ্যোগে আইসিসির প্রচেষ্টায় সরাসরি জড়িত ছিলেন; এর মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর ইসরায়েলের আপিলের বিরুদ্ধে আইসিসির রায়ের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের সঙ্গে ভোট দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত।”

আইসিসির সদর দপ্তর যে দেশে অবস্থিত সেই নেদারল্যান্ডসও এই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক আদালতগুলোকে হস্তক্ষেপমুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

১২৫টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত আইসিসি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই কিছু বিধিনিষেধের মুখে পড়ে। তখন হোয়াইট হাউস দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নেওয়া 'অবৈধ পদক্ষেপ'-এর জবাব দিতেই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর জারি করা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আরোপিত এসব নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেবায় প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গাজায় চালানো গণহত্যামূলক যুদ্ধে 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ'-এর অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টির বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খানও এমন পরোয়ানা জারির পরিণতি নিয়ে হুমকির মুখে পড়েছেন বলে জানা গেছে, যার মধ্যে ইসরায়েলি নেতৃত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্কবার্তাও ছিল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানে প্রায় ৭০ হাজার ৬৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার মানুষ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/১৯