মাজার ভাঙচুর করে গেরুয়া রঙ দিল অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা, এফআইআর দায়ের
-
মাজার
ভারতে বিজেপিশাসিত মধ্য প্রদেশের হোশাঙ্গাবাদ জেলার মাখননগর থানা এলাকায় অবস্থিত পাঁচ দশকের পুরানো একটি মাজারে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর করাসহ তাতে গেরুয়া রঙ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ (সোমবার) হিন্দি গণমাধ্যম ‘দ্যা ওয়্যার’-এ প্রকাশ, জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই মাজারটিতে ভাঙচুর এবং সেটিতে গেরুয়া রঙের প্রলেপ দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার মুসলিমদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মাজারটির দেয়াল এবং গম্বুজে গেরুয়া রং করার ফলে ক্ষুব্ধ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন রোববার সকালে নর্মদাপুর-পিপরিয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে। এ সময়ে বিক্ষোভকারীরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অবধেশ প্রতাপ সিং বলেছেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিদর্শন শেষে একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, পুলিশ বলছে, ঘটনাটি রবিবার সকাল ৬টার দিকে প্রকাশ্যে আসে যখন স্থানীয় কয়েকজন যুবক মাজারটি গেরুয়া রঙে রাঙানো দেখে। মাজারের দরজাও ভাঙা ছিল।
মাজারের তদারকিকারী আব্দুল সাত্তার বলেন, সকাল ৬টার দিকে গ্রামের কয়েকজন স্থানীয় যুবক তাকে জানান, মাজারটিতে গেরুয়া রং করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা জানতে পারি মাজারের কাঠের গেটও ভেঙে ফেলা হয়েছিল এবং সেটিকে মারু নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শুধু মিনার নয়, মাজারের গম্বুজ ও প্রবেশপথও গেরুয়া রঙ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাজার চত্বরে থাকা হ্যান্ডপাম্পও উপড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে তাদের অভিযোগ শোনেনি, কিন্তু তারা ২২ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দিলে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করে। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে স্থানীয়রা বাসিন্দারা অবশেষে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যহার করে নেয়। ওই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫-এ ধারার (ইচ্ছাকৃতভাবে যে কোনও ধর্ম বা শ্রেণীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা) অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় উত্তেজনার মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে এবং মাজারটিকে পুনরায় আসল রঙে রাঙানোর কাজ চলছে। গ্রামবাসীদের সাহায্য করার জন্য ফায়ার ব্রিগেডের দু’টি গাড়িও কাজে লাগানো হয়েছে।
মাখন নগর থানার টাউন ইন্সপেক্টর হেমন্ত শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘আমরা একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছি, কিন্তু আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হল মাজারটি মেরামত করা, যার কাজ চলছে। এরপর অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে। প্রাথমিকভাবে মনে হয় না যে স্থানীয় যুবকরা এটি করেছে কারণ উভয় সম্প্রদায়ের লোকেরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বাস করে এবং অতীতেও এখানে কোনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছিল না।’ গণমাধ্যমে প্রকাশ, মাসখানেক আগে হোশাঙ্গাবাদ জেলার পাচমাড়িতেও একইধরণের ঘটনা ঘটেছিল। দু’টি ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কী না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।