‘বাংলাদেশি’, ‘রোহিঙ্গা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললে আন্দোলন হবে : মুহাম্মাদ সেলিম
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মাদ সেলিম বলেছেন, ‘মানুষকে ধর্ম, ভাষায় বিভাজন করে কাউকে ‘বাংলাদেশি’, কাউকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললে সংসদ থেকে সড়কে আমরাই তার বিরুদ্ধে লড়াই করব।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও বিজেপি’র সিনিয়র নেতা অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে বলেছেন, করোনার প্রকোপ কমলেই আমরা ‘সিএএ’ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) কার্যকর করব এবং আমাদের ভাইদের নাগরিকত্ব দেবো। মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, ‘মমতা দিদি, আপনি তো এটাই চান, যে অনুপ্রবেশ জারি থাকুক, এবং বাংলাদেশ থেকে যে শরণার্থীরা এসেছেন, তারা নাগরিকত্ব না পান। তৃণমূলের লোকেরা কান খুলে শুনে নিন, ‘সিএএ’ বাস্তব ছিল, আছে এবং থাকবে। মমতা দিদি, আপনি কিছুই করতে পারবেন না।’
এরপরেই রাজ্য রাজনৈতিক মহলে উত্তাপের সৃষ্টি হয়েছে এবং ওই ইস্যুতে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের পাশপাশি সিপিআইএম এবং অন্যরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মাদ সেলিম বলেন, ‘যথারীতি রাজ্যে পা দিয়েই অমিত শাহ মন্ত্রোচ্চারণের মতো ‘সিএএ’, ‘এনআরসি’, ‘এনপিআর’ বলতে শুরু করেছেন। খুড়োর কলের মতো আবার ক্রনোলজি বোঝাতে নেমেছেন। রাজ্যবাসীকে এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া কোনও পথ নেই। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই বিপদ রুখব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই এ রাজ্যের সরকারও ‘সিএএ’ রূপায়ণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
মুহাম্মাদ সেলিম বলেন, ‘তৃণমূল এবং তাদের সরকার কখনো ‘এনপিআর’-এর (জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন) বিরোধিতা করেনি কেন? কারণ, এ রাজ্যে ‘এনপিআর’-এর কাজ চলছে। ‘ইডি’, ‘সিবিআই’- এর চাপ সামলাতে দুই পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া হয়েছে এবং ‘এনপিআর’ -এর পদ্ধতি মেনে রাজ্যে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। পিসি-ভাইপোকে (মমতা-অভিষেক) বাঁচাতে রাজ্যের মানুষকে বিপদে ফেলা হচ্ছে। ‘আরএসএস’-এর পরিকল্পিত এই প্রকল্পের অংশীদার বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়েই।’
‘মানুষকে ধর্ম, ভাষায় বিভাজন করে কাউকে বাংলাদেশি, কাউকে রোহিঙ্গা বলে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললে সংসদ থেকে সড়কে আমরাই তার বিরুদ্ধে লড়াই করব’ বলেও মন্তব্য করেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মাদ সেলিম।অন্যদিকে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’ কার্যকর করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ যে মন্তব্য করেছেন, সে প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার ওরা কে? যাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হয়েছেন তারা তো নাগরিকই। নতুন করে তাদের আবার নাগরিক হতে হবে নাকি?’ জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গে এখানে কিছুই হবে না বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/০৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।