সমাজবাদী ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি
উত্তর প্রদেশের একটি কলেজে মুসলিম ছাত্রীদের প্রবেশে বাধা নিয়ে বিতর্ক
ভারতের উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদের হিন্দু পিজি কলেজে বোরকা পরে আসা মুসলিম ছাত্রীদের কলেজে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
গত (বুধবার) ওই ইস্যুতে প্রথম বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং বৃহস্পতিবারও তার জের মেটেনি। মুসলিম ছাত্রীদের ড্রেস কোড দেখিয়ে কলেজের গেটে তাদেরকে থামানো হয়। এরপর কলেজের গেটে হৈচৈ পড়ে যায়। ক্ষুব্ধ মুসলিম ছাত্রীরা বলেন- বোরকা পরা আমাদের অধিকার। গতকাল (বৃহস্পতিবার) অধিকাংশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী কলেজ থেকে দূরে ছিলেন। তারা ড্রেস কোডের বিরোধিতা করার কথা বলেছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা দুই/একদিনের মধ্যে আমাদের ভবিষ্যৎ কৌশল ঠিক করব।
১ জানুয়ারি থেকে কলেজটি প্রথমবারের মতো ড্রেস কোড কার্যকর করেছে। শীতের কারণে এ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। কলেজ খুললেই ওই ইস্যুতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কলেজে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ছাত্রীরা সেখানে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। এরপর সেখানে সমাজবাদী পার্টির ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা কলেজে পৌঁছান। তারা কলেজ গেটে তোলপাড় সৃষ্টি করেন এবং কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ সময়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. সত্যব্রত সিং রাওয়াত এবং চিফ প্রক্টর ডঃ এপি সিং বেরিয়ে আসেন। সমাজবাদী পার্টির ছাত্র ইউনিয়নের পদাধিকারীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। হট্টগোল বাড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
অন্যদিকে, মুসলিম ছাত্রীরা জানায়, তারা সবসময় বোরকা পরে কলেজে যায়। এটি তাদের অধিকার এবং ভবিষ্যতেও তাদের তা করতে দেওয়া উচিত। হট্টগোল বাড়লে পুলিশ এসে কলেজ প্রশাসন ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে। এরপর মেয়েরা ফিরে যায়। সমাজবাদী ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ ড. সত্যব্রত সিং রাওয়াত বলেন, পোশাক বিধির উদ্দেশ্য হল কলেজে শৃঙ্খলা আনা। কেউ কেউ বিষয়টিকে ভুল পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে কলেজ প্রশাসন কোনো আপস করবে না। আজ যদি আমারা বোরকা পরে ক্লাস রুমে যেতে দিই, তাহলে কাল অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরা আরেকটি দাবি জানাবে। আমরা কলেজ গেটেই ছাত্রীদের জন্য চেঞ্জিং রুম করেছি। পোশাকের সঙ্গে দোপাট্টা বা হিজাব নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
মোরাদাবাদের সমাজবাদী পার্টির নেতা এসটি হাসান এমপি বোরকা পরে আসা ছাত্রীদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে ছাত্রীদের অপমান বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এভাবে কলেজে বোরকা পরা ছাত্রীদের প্রবেশ বন্ধ করা সম্পূর্ণ অন্যায়। কলেজ প্রশাসনের উচিত মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরিধান করে ক্লাস রুমে বসতে দেওয়া। কলেজ কর্তৃপক্ষ ড্রেস কোড কার্যকর করলেও ছাত্রীদের হিজাব পরা ও বসতে বাধা দেওয়া যাবে না।
অন্যদিকে, সমাজবাদী পার্টির মোরাদাবাদ যুব শাখার প্রধান আসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘নয়া ড্রেস কোড আশ্চর্যজনক এবং একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকেদের হয়রানি করার জন্য একটি গোপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের গন্ধও আসছে। শিখদের যখন ‘কৃপাণ’সহ ‘পাগড়ি’ পরে যে কোনও কলেজে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে কেন পোশাক বিধি কেবল মুসলিম নারীদের সীমাবদ্ধ করার জন্য? ওই পদক্ষেপ গ্রহণের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব’ বলেও মন্তব্য করেন সমাজবাদী পার্টির যুব নেতা আসলাম চৌধুরী। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/২০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।